সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্মেলনের খসড়া প্রতিবেদনে ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগকে ঘিরে তীব্র সংঘাত দেখা দিয়েছে দুই বাম শরিকের মধ্যে। এই অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে জেলা ফব নেতৃত্ব। রবিবার বৈঠক করে জেলা নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দু’দলের রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি নিয়ে সুরাহা করতে হবে। পরিস্থিতির চাপে পড়ে সম্মেলনে উপস্থিত সিপিএমের জেলা থেকে রাজ্য নেতারাও কেউই ওই অভিযোগের পক্ষে সায় দেননি। সম্মেলন শেষে দলের পলিটব্যুরো সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ঘোষণা করতে বাধ্য হন, “প্রতিবেদন সংশোধিত ও সংযোজিত হয়েছে। রিপোর্টের অংশ হিসেবে ওই বিষয়টি গৃহীত হচ্ছে না।”
বস্তুত, এতদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে মাওবাদীদের সঙ্গে যোগসাজসের অভিযোগ তুলত সিপিএম। কিন্তু ওই খসড়া প্রতিবেদনে এই প্রথম সিপিএমের তরফে বামফ্রন্টের অপর শরিক ফব-র বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, ‘আড়শা, বলরামপুর বিশেষ করে এই দু’টি ব্লকের এফবি-র কিছু কর্মীর মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং আমাদের নেতা কর্মীদের খুন হওয়া ও তার তিক্ততার জের এখনও আছে। আমাদের দায়িত্ব এবং বামফ্রন্টের ঐক্যের উপর গুরুত্ব দিলেও সমস্যাটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি।’
সিপিএমের জেলা নেতৃত্বের একাংশ দাবি করেছেন, রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর আগে শেষ দু’বছরে মাওবাদীদের হাতে জঙ্গলমহলে সিপিএমেরই কমবেশি ৪২ জনকে খুন হতে হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দলের জঙ্গলমহলের কিছু কর্মী নেতৃত্বের কাছে মাওবাদীদের সঙ্গে ফব-র কিছু কর্মীর যোগসূত্র খুঁজে পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তা ছাড়া বিশেষত অযোধ্যা পাহাড় লাগোয়া ফব-র শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এলাকায় সিপিএমের নেতা-কর্মীরা যাতে মাথা তুলতে না পারেন, সে জন্য ফব-র একাংশ সব সময়েই সচেষ্ট ছিল। দলের সেই সব নেতা-কর্মীদের ওই অসন্তোষের কথাই এ বার প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে।