বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতে পারিবারিক কোন্দলের মাত্রা ততই চড়ছে! এ বার কোন্দল বেড়েছে মতুয়া মহাসঙ্ঘের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে। বিবাদের দু’প্রান্তে মতুয়া ঠাকুরবাড়িরই দু’পক্ষ সদ্যপ্রয়াত কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী এবং অন্য দিকে কপিলেরই ভাই মঞ্জুলকৃষ্ণ ও তাঁর দুই ছেলে। বিবাদ ফের গড়িয়েছে থানা-পুলিশ পর্যন্ত। ঠাকুরবাড়িতে বসাতে হয়েছে পুলিশ পিকেটও!
কপিলকৃষ্ণ ছিলেন মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি এবং বনগাঁর তৃণমূল সাংসদ। তাঁর মৃত্যুতে মহাসঙ্ঘের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে মতুয়া সম্প্রদায়ের উপরে প্রভাব ধরে রাখতেই সচেষ্ট হয়েছে দুই শিবির। আপাতদৃষ্টিতে এই বিবাদ পারিবারিক হলেও রাজনীতির সঙ্গে তার সম্পর্ক একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কপিলকৃষ্ণের মৃত্যুতে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন আসন্ন। রাজ্য জুড়ে একের পর এক ঘটনায় শাসক দল যখন কোণঠাসা, মতুয়া ভোটই হতে পারত বনগাঁয় তৃণমূলের তাস। মতুয়া মহাসঙ্ঘের নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখতে পারলে তৃণমূলের টিকিট পাওয়ার দৌড়েও এগিয়ে থাকা যাবে, এই অঙ্কেই ঠাকুরবাড়ির অন্দরের বিবাদকে ব্যাখ্যা করছেন মতুয়াদের একাংশ।
একই সঙ্গে তাঁদের বড় অংশ ঠাকুরবাড়িতে এমন কাজিয়ায় বিরক্তও। কেউ কেউ মনে করছেন, মতুয়া ভাবাবেগের সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে গিয়ে বিষয়টির তিক্ততা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে মতুয়া সম্প্রদায়ের উপরে সার্বিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ কমে আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই। আর তারই জেরে বিজেপি এ বার মতুয়া ভাবাবেগেও ভাগ বসাতে পারে। যে হেতু মতুয়াদের নাগরিকত্ব-সহ মূল দাবিদাওয়ার সঙ্গে আদর্শগত ভাবে বিজেপি-র মিলই বেশি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তৃণমূল নেতৃত্বও এখন দূরত্ব রেখে চলছেন ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে।