বিচারপতি জানান, সরকারি আইনজীবী সাধন হালদার এই মামলার জন্য কিছুটা সময় চেয়েছেন। তাই তিনি এ দিনই পাঁচুগোপালবাবুর মুক্তির নির্দেশ দেবেন না। সোমবার এই মামলার আবার শুনানি হবে।
১৯৭৯ সালে চিৎপুর থানা এলাকা থেকে পাঁচুগোপালবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। একটি খুনের মামলার বিচারে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। কিন্তু পাঁচুগোপালবাবুর দাবি, তিনি এখনও জানেন না কোন কোন ধারায় তাঁকে সাজা দেওয়া হয়েছিল। কুড়ি বছর সংশোধনাগারে কাটানোর পরে তিনি মুক্তির আর্জি জানিয়েছিলেন।
পাশাপাশি বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করে তাঁর বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ এবং কোন অভিযোগে সাজা খাটছেন, তাও জানতে চান পাঁচুগোপালবাবু।
বিচারপতি মামলার কাগজপত্র পড়ে দেখেন, পাঁচুগোপালবাবুর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার ধারাগুলিতে ২০ বছর সাজাই হতে পারে না। বিচারপতি সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, কেন রাজ্যপালের নির্দেশের পরেও পাঁচুগোপালবাবুকে এখনও মুক্তি দেওয়া হয়নি। তা হলে কি সরকার রাজ্যপালের নির্দেশও অমান্য করছে?
সরকারি আইনজীবী জানান, পাঁচুগোপালবাবুর বিরুদ্ধে আরও অনেকগুলি অভিযোগ রয়েছে। সেই কারণেই তাঁকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।
সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি সেই সব অভিযোগের তালিকা দেখতে চান। সরকারি আইনজীবী জানান, তাঁর কাছে সেই তালিকা নেই। কিছুটা সময় পেলে তিনি সেই তালিকা আদালতকে দেখাতে পারেন। বিচারপতি জানান, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, এক জন মানুষ তাঁর যে সাজা পাওয়া উচিত নয়, তা ভোগ করছেন। রাজ্যপাল সব কিছু বুঝে তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। তার পরেও সরকারি আইনজীবী এই বিষয়ে আদালতকে সম্যক জানাতে পারছেন না।
এর পরেই বিচারপতি দত্ত বলেন, “হাইকোর্ট বা আদালতের নির্দেশ অমান্য করা এই সরকারের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন রাজ্যপালের নির্দেশও সরকার মানতে রাজি নয়।” তিনি সাফ জানিয়েছেন, আদালত এই ধরনের আচরণ বরদাস্ত করবে না। সোমবার পর্যন্ত রাজ্যকে সময় দিয়েছে বেঞ্চ। বিচারপতি দত্ত বলেন, “আশা করি, আদালতের হস্তক্ষেপের আগেই পাঁচুগোপালবাবু মুক্তি পাবেন।”