মঙ্গলবারের ঘটনার প্রতিবাদে কাঁথি শহরে বুধবার বিকেলে তৃণমূলের ধিক্কার মিছিল। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
মঙ্গলবার কাঁথিতে অমিত শাহের সভার শেষে সংঘর্ষ, ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বুধবার রাত পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কাঁথি থানা এলাকায় ৬ জন, মারিশদা থানা এলাকায় ৩ এবং চণ্ডীপুর থানা এলাকা ৩ জন গ্রেফতার হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে গোলমাল পাকানো, পুলিশকে আক্রমণ, পুলিশের গাড়ি এবং সরকারি বাসে ভাঙচুর সহ একাধিক অভিযোগে মামলা হয়েছ। এদিন বিকেলে কাঁথি শেরপুরমোড় থেকে ধিক্কার মিছিল বের করে তৃণমূল।
গত রাতে তাণ্ডবের পর বুধবার সকালে থমথমে ছিল মহকুমা শহর। মূলত দিঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়কের মারিশদা থেকে কাঁথির খড়গপুর বাইপাস পর্যন্ত এলাকাতেই রাস্তার উপর তাণ্ডব চলে। এ দিন সকালে রাস্তা থেকে ভাঙচুর করা সরকারি-বেসরকারি বাস-গাড়ি পুলিশ সরিয়ে নিয়ে যায়। তবে অনেক বেলা পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে ভাঙা কাচের টুকরো। আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে গত রাতের আতঙ্ক যে পুরোপুরি মোছেনি, অনেকের কথাতেই তা বোঝা গিয়েছে। কালীনগর এলাকা এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা রাজনীতি বুঝি না। কিন্তু একটা সভাকে ঘিরে যে ভাবে তাণ্ডব চলল, তাতে ভয় তো হচ্ছে। সামনেই ফের লোকসভা ভোট। আরও সভা হবে। তখন কী হবে?’’ আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘গত রাতের ঘটনায় বাড়ির লোকজন এতটাই ভয় পেয়েছে যে আজ ছেলেমেয়েকে স্কুলে পর্যন্ত পাঠাইনি।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙচুর হওয়া সরকারি বাসের চালক ও খালাসিরা মঙ্গলবার রাতেই কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এদিন বিকেল শেরপুরমোড় থেকে ধিক্কার মিছিল বের করে তৃণমূল। সারা শহর পরিক্রমা করে মিছিল শেষ হয় কাঁথি চৌরঙ্গিমোড়ে। সেখানে প্রতিবাদ সভায় তৃণমূল নেতা সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘যারা মঙ্গলবার কাঁথি শহরে অশান্তি করেছে, আগামীদিনে তাদের আর কোনও কর্মসূচি এই শহরে করতে দেবে না কাঁথির শান্তিপ্রিয় মানুষ।’’ এদিন মিছিল ও সভায় ছিলেন বিধায়ক বনশ্রী মাইতি, রণজিৎ মণ্ডল, জেলা সভাধিপতি দেবব্রত দাস, জেলার অন্যতম সম্পাদক কনিষ্ক পণ্ডা প্রমুখ। তবে সৌমেন্দুর মন্তব্যের জবাবে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন মাইতি বলেন, ‘‘সভা-সমিতি করা সব দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। সভা করতে দেব না, এমনটা বলা ঠিক নয়।’’ গতরাতে ঘটনায় তাঁরা পুলিশে অভিযোগ করেছেন কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, যথাযথ ভাবে অভিযোগ জানানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, অমিত শাহের সভার জন্য পুলিশ একজন মণ্ডপ-কর্মী ও এক জমিদাতার ছেলে সুশীল দাসকে গ্রেফতার করেছে।
মঙ্গলবারের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার চণ্ডীপুর বাজারে তৃণমূল মিছিল করে। এ দিন মালদহে কাঁথির প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘আমরা বিজেপির সভায় বাধা দিইনি। কিন্তু সভা শেষ হতেই বিজেপির লোকজন আমাদের পার্টি অফিসে আগুন ধরায়। কর্মীদের মারধর করে। সরকারি বাসেও আগুন লাগায়। আমি একটি প্রতিবন্ধী স্কুলে বাস দিয়েছিলাম। সেই বাসেও আগুন ধরানো হয়, কেন না তাতে আমার নাম লেখা ছিল। যে মাঠে ওরা ৮ জেলা থেকে লোক এনে সভা করেছে, সেই মাঠে আমি মাত্র দু’টি বিধানসভার প্রায় এক লক্ষ লোক নিয়ে পাল্টা সভা করে জবাব দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy