দর্শক হয়েই রইলেন মুকুল।
সভা শুরুর কথা ছিল দুপুর ১২টায়। একেবারে সময় মিলিয়ে সেই সময়েই ধর্মতলায় এসে থামল মুকুল রায়ের গাড়ি। অনেক দিন পরে এলেন ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ। তবে সময়েই এলেন। এক সময় এই সভার আয়োজনের জন্য দিনরাত এক করে দিতেন ধর্মতলা চত্বরে। এ বার সমাবেশে এলেও সে সব থেকে অনেক দূরেই রইলেন মুকুল।
একদা তিনি ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বৃহস্পতিবার তাঁর উপস্থিতির খানিক আগেই তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে মঞ্চে উঠে পড়লেন নতুন প্রজন্মের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের শুরু থেকে দলের সঙ্গে থাকা মুকুল এই প্রথম একেবারে অন্যরকম পরিস্থিতিতে। খাতায়কলমে তিনি বিজেপি বিধায়ক। কিন্তু রীতিমতো ঘটা করে তৃণমূলে ফিরেছেন। যদিও বিধানসভায় বিজেপির পক্ষ থেকে বিধায়কপদ খারিজের দাবি ওঠার পর থেকে তৃণমূল প্রকাশ্যে মুকুলকে ‘নিজেদের’ বলে দাবি করতে পারে না। অন্য দিকে, মুকুল বিজেপিতেও নেই। তবে প্রকাশ্যে কী বলতে হবে, সেটা মুকুল নিজেও সবসময় মনে রাখতে পারেন না। যেমন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট দিতে বিধানসভায় এসে ‘বেঁফাস’ বলে ফেলেছেন। ভোট দিয়ে ফেরার পথে স্পষ্টই বলে দেন, ‘‘আমি বিজেপির বিধায়ক নই।’’ সেটা আইনত বলা যায় কি না, তা ভেবে দেখেননি। তাঁর সেই বক্তব্যের ভিডিয়ো নিয়ে আবার আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছে বিজেপি।
বৃহস্পতিবার অবশ্য তৃণমূলের সভায় বক্তার তালিকায় ছিলেন না মুকুল। সভাস্থলে বসে নিশ্চয়ই অতীতের কথা মনে পড়েছে মুকুলের। তৃণমূল যত বড় হয়েছে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশও তত বড় হয়েছে। আবার উল্টো দিক থেকে এ কথাও বলা যায় যে, ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ দেখেই বোঝা গিয়েছে তৃণমূল জেলায় জেলায় কতটা বাড়ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও তৃণমূলের যে সব নেতারা সেই বৃদ্ধির সাক্ষী, তাঁদের অন্যতম মুকুল। কিন্তু সেটা ২০১৬ সালের ২১ জুলাই পর্যন্ত। তার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব এবং ২০১৭ সালের নভেম্বরে মুকুলের বিজেপিতে যোগদান।
এর পরে মুকুলের আর আসা হয়নি ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তো বটেই, রেলমন্ত্রী হিসাবেও ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে বড় ভূমিকায় থেকেছেন। কিন্তু এ বার তৃণমূলের কাছে থেকেও আসলে দূরেই রইলেন মুকুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy