Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বরুণের কাকাকে হুমকির অভিযোগ

সুটিয়ার প্রতিবাদী মঞ্চের সম্পাদক, নিহত বরুণ বিশ্বাসের কাকা অতুলচন্দ্র বিশ্বাসকে ভয় দেখানো, শাসানো ও সামাজিক সম্মানহানির হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে। নন্দদুলাল দাস নামে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সকালে গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন অতুলবাবু। সঙ্গে ছিলেন প্রতিবাদী মঞ্চের সভাপতি ননীগোপাল পোদ্দার।

বাঁ দিকে, অতুলচন্দ্র বিশ্বাস। ডান দিকে, নন্দদুলাল দাস। —নিজস্ব চিত্র।

বাঁ দিকে, অতুলচন্দ্র বিশ্বাস। ডান দিকে, নন্দদুলাল দাস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৪ ০০:৫৫
Share: Save:

সুটিয়ার প্রতিবাদী মঞ্চের সম্পাদক, নিহত বরুণ বিশ্বাসের কাকা অতুলচন্দ্র বিশ্বাসকে ভয় দেখানো, শাসানো ও সামাজিক সম্মানহানির হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে। নন্দদুলাল দাস নামে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সকালে গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন অতুলবাবু। সঙ্গে ছিলেন প্রতিবাদী মঞ্চের সভাপতি ননীগোপাল পোদ্দার।

অভিযোগ, সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ স্থানীয় চাঁদপাড়ার বাসিন্দা নন্দদুলালবাবু ফোন করে অতুলবাবুকে তাঁর বাড়িতে আসার নির্দেশ দেন। তিনি যেতে অস্বীকার করলে তাঁর মানহানির হুমকি দেওয়া হয়। অভিযোগ অস্বীকার করে নন্দবাবুর পাল্টা দাবি, অতুলবাবু তাঁর মানহানি করেছেন।

অন্য দিকে, ননীগোপালবাবুর অভিযোগ, নন্দবাবু প্রকাশ্য সভায় কোনওরকম তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই বরুণ বিশ্বাসের খুনের সঙ্গে নেতা-মন্ত্রীদের নাম জড়িয়ে দিচ্ছেন। তাতে সমস্যায় পড়ছে মঞ্চ।

২০১২ সালের ৫ জুলাই গোবরডাঙা রেল স্টেশনে দুষ্কৃৃতীদের গুলিতে খুন হন বরুণ। সুটিয়ায় পরপর গণধর্ষণের ঘটনার পরে তিনিই উদ্যোগী হয়ে গড়ে তুলেছিলেন মঞ্চটি। তাঁর খুনের মামলা এখনও বিচারাধীন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সিআইডি তদন্তে নামে। মোট ৭ জন গ্রেফতার হন। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরী ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন। এক জনের সাজাও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। পাঁচ জনের এখনও বিচার চলছে।

শহীদ বরুণ বিশ্বাস স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি বছর উনষত্তরের অতুলবাবু রাজ্য সরকারারে অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। তাঁর দাবি, সোমবারের ঘটনার পরে মানসিক ও শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। নন্দবাবুর বক্তব্য, আগামী ৫ জুলাই বরুণের মৃত্যু দিনটি কীভাবে স্মরণ করা হবে, তা নিয়ে সম্প্রতি সুটিয়ায় একটি সভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। অথচ অতুলবাবু তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তিনি খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে এসেছেন। নন্দদুলালবাবু বলেন, “আমি মন্ত্রীর বাড়িতে যাইনি। আমি ওই সভাতেও ছিলাম না। পরে আমি অতুলবাবুর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তিনি ওই তথ্য কোথা থেকে জানতে পেরেছেন? অতুলবাবু জানান, উনি অন্য এক জনের কাছ থেকে ওই কথা জানতে পেরেছেন। তখন আমি ওনাকে বলি, সুটিয়ায় গিয়ে প্রকাশ্যে ওই কথা ফিরিয়ে নিতে হবে। না হলে আমি ওঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।”

অতুলবাবুর দাবি, “ওই সভায় বলেছিলাম, নন্দবাবু মামলাটি বরুণের দাদা অসিতকে দিয়ে হাইকোর্টে নিয়ে গিয়ে দেরি করিয়ে দিচ্ছেন। আরও বলি, আমার কাছে খবর আছে, নন্দবাবু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। দরকারে ফোনে তাঁদের কথার রেকর্ডিং দেখা হোক।”জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “বরুণের খুনের কিনারা ও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের ব্যাপারে রাজ্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। সত্য প্রকাশিত হয়েছে। কিছু লোক এই বিষয়টি নিয়ে অযথা জলঘোলা করছেন।” তবে তাঁর বাড়িতে যাওয়া প্রসঙ্গে কোনও কথা বলেননি তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE