Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

অনাস্থায় ভোটাভুটিতে গরহাজির বামেরা, পঞ্চায়েত দখল তৃণমূলের

সিপিএমের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল তৃণমূল। মঙ্গলবার ছিল সেই প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটি। সিপিএমের কোনও সদস্য হাজির না হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেল তৃণমূল। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ১৯ অগস্ট বনগাঁ ব্লকের বৈরামপুর পঞ্চায়েতে প্রধান সিপিএমের বাবু হোসেন মণ্ডলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ব্লক প্রশাসনের কাছে জমা করে তৃণমূল। এই পঞ্চায়েতে ২১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৮টি।

পুলিশি প্রহরায় ভোট। বৈরামপুর পঞ্চায়েতের সামনে তোলা ছবি।

পুলিশি প্রহরায় ভোট। বৈরামপুর পঞ্চায়েতের সামনে তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোপালনগর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৫
Share: Save:

সিপিএমের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল তৃণমূল। মঙ্গলবার ছিল সেই প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটি। সিপিএমের কোনও সদস্য হাজির না হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেল তৃণমূল।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ১৯ অগস্ট বনগাঁ ব্লকের বৈরামপুর পঞ্চায়েতে প্রধান সিপিএমের বাবু হোসেন মণ্ডলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ব্লক প্রশাসনের কাছে জমা করে তৃণমূল। এই পঞ্চায়েতে ২১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৮টি। বামেরা পায় ১২টি এবং নির্দল পেয়েছিল ১টি আসন। পরে সিপিএমের উপ-প্রধান সুবল কর্মকার-সহ তিন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। অনাস্থা প্রস্তাব আনা ছিল কার্যত সময়ের অপেক্ষা।

কিন্তু ভোটাভুটিতে কেন গরহাজির থাকলেন বামেরা?

সিপিএমের বনগাঁ-বাগদা জোনাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, “আমরা ভোটাভুটি থেকে ওয়াক আউট করেছি। কারণ, আমাদের যে তিন জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাদের সদস্যপদ খারিজের দাবি জানিয়ে আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। ফলে বিষয়টি এখন বিচারাধীন। তাই আমরা এই ভোটে কেউ যোগ দিইনি।” যদিও এ বিষয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, “হাইকোর্ট থেকে ভোট বাতিল করার ব্যাপারে কোনও নির্দেশ আমরা পাইনি।” পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা হায়দার আলি মোল্লা হায়দার বলেন, “এত দিন এলাকায় উন্নয়ন বন্ধ ছিল। তা এ বার দ্রুত শুরু করব।”

গোলমালের আশঙ্কায় এ দিন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল আঁটোসাঁটো। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শীঘ্রই নতুন প্রধান নির্বাচন ও বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

অন্য দিকে, হাবরা ২ ব্লকের ভুরকুণ্ডা পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধানের বিরুদ্ধেও এ দিন অনাস্থা আনে তৃণমূল। এখানেও বামেদের অনুপস্থিতিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল।

গত পঞ্চায়েত ভোটে এখানে ২১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ১০টি আসন। বামেরা পায় ১১টি আসন। তৃণমূলের দাবি, সম্প্রতি সিপিএমের আলাউদ্দিন মণ্ডল নামে এক সদস্য তাদের দলে যোগ দিয়েছেন। এ দিন ভোটাভুটিতে তৃণমূল ১১টি ভোট পেয়েছে।

সিপিএম অবশ্য এই ভোটাভুটিকে বেআইনি বলেই মনে করে। অশোকনগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী কর বলেন, “তৃণমূল অনাস্থা চেয়ে প্রশাসনের কাছে যে চিঠি দিয়েছিল, তাতে উল্লেখ ছিল সর্বভারতীয় তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হওয়া সদস্যেরা অনাস্থা আনছেন। সেখানে আলাউদ্দিনের নামও ছিল। কিন্তু তিনি সিপিএমের টিকিটে দাঁড়িয়ে ভোটে জিতেছিলেন। ফলে অনাস্থার চিঠিটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। বিডিওকে এ ব্যাপারে বলা হলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি। দলীয় সূত্রের খবর, আলাউদ্দিনকে শো-কজ করা হয়েছিল। তিনি উত্তর দেননি। তা ছাড়া, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম সম্পাদক গৌতম দেব আলাউদ্দিনের সদস্য পদ খারিজের দাবি জানিয়ে বিডিওকে চিঠি দিলেও ব্লক আধিকারিক কোনও ব্যবস্থা নেননি। তার উপর, দলের এক পঞ্চায়েত সদস্য হজ করতে গিয়েছেন। সে জন্যও ভোটাভুটি স্থগিত রাখতে বলা হয়েছিল বিডিওকে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। সত্যসেবীবাবু বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা আইনের দ্বারস্থ হচ্ছি।” অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায় অবশ্য বলেন, “সিপিএম হেরে যাবে বুঝতে পেরে অনাস্থায় যোগ না দিয়ে নাটক করছে। শীঘ্রই নতুন প্রধান নির্বাচন করা হবে।” হাবরা ২ বিডিও ত্রিদীপ রায় অবশ্য সিপিএমের আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE