গোবরডাঙায় বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।
সারদা কাণ্ড থেকে শুরু করে একের পর এক ঘটনায় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল বেকায়দায়।
এই পরিস্থিতিতে তাদের উপর চাপ আরও বাড়াতে কড়া সমালোচনার রাস্তা ধরেছেন বিরোধী নেতারা। বনগাঁ লোকসভা উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী সুব্রত ঠাকুরের সমর্থনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোবরডাঙায় সভা করতে এসে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বিশ্রাম’ নেওয়ার ‘পরামর্শ’ দিলেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য।
মমতাকে উদ্দেশ করে রাজ্যে বিজেপির একমাত্র বিধায়ক শমীকবাবু বললেন, “বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ করে একটু কাছে এসে দেখুন না! আগামী সাড়ে চার বছর তো নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেই সংসার করতে হবে। নির্বাচনে লড়াই হবে। কিন্তু ব্যক্তি আক্রমণ বা কুত্সা যেন না হয়।” এর পরেই তাঁর সংযোজন, “মুখ্যমন্ত্রী ক্লান্ত। তাঁর বিশ্রামের প্রয়োজন।” মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করে শমীকের তির, “নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত বুঝে মুখ্যমন্ত্রী ভোটের প্রচার শুরু না করে দিল্লিতে আপের জন্য প্রচার শুরু করেছেন।” মমতা সরকার এবং দলের মধ্যে কোনও পার্থক্য রাখেননি বলেও মন্তব্য করেন শমীক।
হাওড়ার প্রতিবাদী যুবক অরূপ ভাণ্ডারীর মৃত্যর কারণ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী গোষ্ঠীদ্বন্দের কথা বলায় তাঁর সমালোচনা করেছেন শমীকবাবু। ঘটনা প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন গাইঘাটার নিহত শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস এবং কামদুনির ঘটনার কথা। শমীকবাবুর কথায়, “ওরা ভেবেছিলেন লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল সরকার গঠনে নির্ণায়ক শক্তি হবে। কিন্তু দেখা গেল ৩৪টি আসন পেয়েও ওদের মুখে হাসি ফুটল না। ভারতের রাজনীতিতে ওরা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।”
তৃণমূলের পাশাপাশি সিপিএম এবং কংগ্রেসকেও একহাত নেন শমীক। তাঁর বক্তব্য, “সিপিএমকে মানুষ পরিত্যাগ করেছে। ওদের ভোট দিলে আপনার ভোটটা নষ্ট হবে বলব না, তবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে। আর গোটা দক্ষিণবঙ্গে কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্ব নেই। সভায় দলের জেলা বিজেপি সভাপতি কামদেব দত্ত, দলীয় প্রার্থী সুব্রত ঠাকুর উপস্থিত ছিলেন। কালোটাকার প্রসঙ্গ তুলে শমীকবাবু বলেন, “কালো টাকা বিদেশের ব্যাঙ্ক থেকে ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে। তার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে দেশের মধ্যে যারা গরিব মানুষকে লুঠ করেছে তাদের আগে ধরতে হবে।”
এ দিকে, তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুরের সমর্থনে প্রচারে গাইঘাটার ধর্মপুর বাজারে সভা করতে এসে দলের নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধলেন। তিনি বলেন, “৩১ শতাংশ ভোট পেয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তাঁর মতো এত নিম্নমানের প্রধানমন্ত্রী অতীতে দেশে কখনও হননি।” তাঁর আক্রমণ, “নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিজ্ঞাপন করেছেন উনি। কালো টাকা উদ্ধারের কাজ কোথায় গেল? কালো টাকা নিয়েই মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ফলে তিনি কালো টাকা উদ্ধার করতে পারবেন না।”
সিপিএম এবং বিজেপিকে এক সুতোয় বেঁধে বেচারামের তোপ, “বিজেপি আর সিপিএমের চরিত্র এক। সিপিএমের লোকদের দেখা যাচ্ছে বিজেপির পতাকা বেধে দিতে। নতুন বোতলে পুরনো মদ। সিপিএম চিটফান্ডের টাকায় পার্টি ফান্ড ভরাট করেছে।”
বেচারামের সঙ্গে ছিলেন দলের বিধায়ক সুজিত বসু। এ দিন হাবরার বিভিন্ন এলাকায় মমতা ঠাকুরের সমর্থনে প্রচারে আসেন দলের সাংসদ অর্পিতা ঘোষও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy