Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাঁধ ভেঙে জল ঢুকল সুন্দরবনে

আয়লা হওয়ার ছ’বছর কেটে গেলেও আজও পাকাপোক্ত হল না সুন্দরবনের নদীবাঁধ। সে জন্য ভুগতে হচ্ছে ক্যানিংবাসীকে। এই এলাকায় প্রায় অধিকাংশ বাঁধেরই অবস্থা খুব খারাপ। মঙ্গলবার সকালে ক্যানিংয়ের তুমকাঠি এলাকায় মাতলা নদীর প্রায় ১৮ ফুট বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে।

বাসন্তীর চোরাডাকাতিয়ায় প্লাবিত এলাকা।—নিজস্ব চিত্র।

বাসন্তীর চোরাডাকাতিয়ায় প্লাবিত এলাকা।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং ও বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৪ ০০:৫৫
Share: Save:

আয়লা হওয়ার ছ’বছর কেটে গেলেও আজও পাকাপোক্ত হল না সুন্দরবনের নদীবাঁধ। সে জন্য ভুগতে হচ্ছে ক্যানিংবাসীকে। এই এলাকায় প্রায় অধিকাংশ বাঁধেরই অবস্থা খুব খারাপ। মঙ্গলবার সকালে ক্যানিংয়ের তুমকাঠি এলাকায় মাতলা নদীর প্রায় ১৮ ফুট বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে। অন্য দিকে, বাসন্তীর চোরা ডাকাতিয়া এলাকায় নদীবাঁধে ৯-১০ ফুট বড় গর্ত হয়ে এলাকায় জল ঢুকে যায়। খবর পেয়ে সেচ দফতর বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছে। বাসন্তী সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁধের মধ্যে একটা চোরা গর্ত হয়ে কিছুটা জল ঢুকেছিল। এখন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। না হলে এই এলাকায় আজ বড় ক্ষতি হতে পারত। ক্যানিং-১ বিডিও বুদ্ধদেব দাস বলেন, “তুমকাঠিতে বাঁধ ভেঙে কয়েকটি বাড়িতে জল ঢোকে। সেচ দফতর দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় বড় কোনও সমস্যা হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

জোয়ারে নদীর জল বাড়ায় প্লাবিত হয়েছে বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ এবং সন্দেশখালি-সহ বিভিন্ন এলাকাও। বসিরহাটের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “কয়েকটি জায়গায় বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে বা বাঁধ ধসেছে বলে খবর পেয়েছি। দ্রুত মেরামতির ব্যবস্থা নেওয়া হলেও জলস্ফীতির জন্য সর্বত্র তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সব ব্লকে ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর পাশাপাশি বিডিওদের সজাগ থাকার জন্য বলা হয়েছে।”

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর নাগাদ হিঙ্গলগঞ্জের যোগেশগঞ্জ এলাকার শ্রীধরকাটি, সর্দাপাড়া, মাধবকাটি, কানাইকাটি, দিঘিরপাড়া এলাকাতে কালিন্দী নদীর বাঁধে ধস নামে। জলস্ফীতির জন্য সন্দেশখালি ২ ব্লকের শুকদুয়ানি গ্রামে বালিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে যায়। স্থানীয় রিফিউজি স্কুলের পাশে প্রায় ৪০ ফুট বাঁধ ভেঙেছে বলেও জানা গিয়েছে। যে ভাবে ঝোড়ো হাওয়া দিচ্ছে এবং মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে রাতের দিকে ভাঙন বড় আকার নিতে পারে বলে জানা গিয়েছে। এই আশঙ্কায় নদীর ধার থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বেড়মজুর এক নম্বর গাজিখালিতে ছোট কলাগাছি নদীর বাঁধ ভাঙলে সেখানে পঞ্চায়েতের পক্ষে কোনও রকমে মাটির বস্তা দিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করা হয়। কালিনগর মসজিদ বাড়ি এবং ঘোষপুর এলাকায় বেতনী নদীর বাঁধে বড় আকারের ফাটল দেখা দিয়েছে। কোনও কোনও জায়গাতে বাঁধের নীচ দিয়ে জল ঢোকার খবর মিলেছে।

গ্রামবাসীদের বক্তব্য, যে কোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে বড় এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই গ্রামের মানুষ রাত জেগে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছে। আতাপুর-তালতলার কাছেও রায়মঙ্গল নদীর বাঁধে বড় রকম ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

flood condition canning basirhat southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE