প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা। কলকাতার বেসরকারি কলেজের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বছর কুড়ির ছাত্রটি তখনও ক্যানিং প্ল্যাটফর্ম থেকে বাসস্ট্যান্ড হন্যে হয়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। কী ভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছবেন জানা নেই। পরীক্ষা না দিতে পারলে একটা বছর নষ্ট। উদ্বিগ্ন হয়ে যাকে পারছেন জিজ্ঞেস করছেন, “কাকু, অবরোধ কখন উঠবে বলতে পারেন?” শেষ মুহূর্তে অতি কষ্টে তাঁর বাবা একটি গাড়ি ভাড়া করে ছেলেকে পরীক্ষা দিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন।
শুধু ওই ছাত্রই নয়, মঙ্গলবার একই দুর্ভোগে নাকাল হলেন কলকাতায় কাজে যাওয়া দিনমজুর থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ-অফিস যাত্রীরা। পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ দিন সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ক্যানিং স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে অবরোধ করে ক্যানিং ১ ব্লক যুব তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “এ দিনের অবরোধের ফলে তিনটি ট্রেন বাতিল হয়েছে।” অন্য দিকে, যুব তৃণমূলের সভাপতি পরেশরাম দাস, জেলা পরিষদের তৃণমূলের সহ সভাধিপতি শৈবাল লাহিড়ির নেতৃত্বে ক্যানিং বাসস্ট্যান্ড থেকে বাজার এলাকা হয়ে স্টেশন পযর্ন্ত প্রতিবাদ মিছিলেরও আয়োজন করা হয়।
রাস্তা অবরোধের জেরে ক্যানিং-বারুইপুর রোডে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় সারি দিয়ে বাস, অটো, ট্রেকার দাঁড়িয়ে যায়। বাস-ট্রেন এক সঙ্গে অবরোধ হওয়ার ফলে কয়েক হাজার মানুষ ওই চত্বরে আটকে পড়েন। সকালে কাজে বেরিয়ে উপায় না দেখে অনেককেই বাড়ির ফিরতি পথ ধরতে হয়। এক পুলিশ অফিসারের এ দিন আলিপুর আদালতে খুনের মামলার সাক্ষী দেওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত মোটর বাইকে রওনা দিতে হল তাঁকে। হতাশ গলায় বললেন, “কোর্টে পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যাবে। জানি না কপালে কী আছে!”