অবশেষে তৈরি হল রিং বাঁধ। ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাত জেগে হিঙ্গলগঞ্জের রমাপুর গ্রামে রায়মঙ্গল নদীতে রিং বাঁধ তৈরি করে গ্রামের মধ্যে নোনা জল ঢোকা আটকালেন বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের এমন আন্তরিকতাকে সাধুবাদ জানিয়েছে প্রশাসনও।
বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিস আলি বলেন, “যে ভাবে গ্রামের মানুষ প্রশাসনের সহযোগিতা করেছে তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তবে ওই এলাকায় বাঁধকে শক্তপোক্ত করার জন্য জেলাশাসক এবং সেচকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে।”
গত সোমবার রাত তখন ১০টা। রমাপুর স্কুলবাড়ি ঘাটের কাছে বাড়ি মনোরঞ্জন মণ্ডলের। খাওয়ার পরে হাত ধুতে বাইরে বেরিয়েছেন। কানে এল রায়মঙ্গল নদীর জলের শব্দ। তার পাশাপাশি ঝপাং ঝপাং করে জলের মধ্যে মাটির চাঁই পড়ার শব্দ। গত তিন বছর আগে রমাপুর স্কুলবাড়ি এলাকায় আস্ত একটা কংক্রিটের জেটিঘাট রায়মঙ্গলের গভীরে তলিয়ে গিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে মনোরঞ্জনবাবু বুঝতে পেরেছিলেন যে বাঁধ ভাঙতে চলেছে। একবার বাঁধ ভেঙে নদীর নোনা জল গ্রামে ঢুকলে একফসলি ধান নষ্ট হয়ে যাবে। চাষিদের দুর্গতির শেষ থাকবে না। সে কথা ভেবে তিনি প্রথমে খবর দেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য খগেন কামিলাকে। রাতেই জড়ো হয় এলাকার লোকজন। নদীর দিকে আলো ফেলতেই দেখা যায় কেবল বাঁধ-ই নয়, ভেঙে পড়ছে চড়ে থাকা গাছপালাও। মাত্র তিন ঘণ্টায় একে একে প্রায় ৪০০ ফুট বাঁধ এবং ওই বাঁধের সামনে থাকা ৫০০ ফুটের মতো চর এবং শতাধিক গাছগাছালি নদীর গর্ভে তলিয়ে যায়। তখন ভাটা থাকায় গ্রামের মধ্যে নোনা জল ঢুকতে পারেনি। তবে জোয়ার আসলে যে গ্রামের মধ্যে জল ঢুকে পড়বে, এই আশঙ্কায় আতঙ্কিত ছিলেন গ্রামের মানুষ। প্রথমে পঞ্চায়েত পরে সেচ দফতরের সহযোগিতায় শুরু হয় বাঁধ বাঁধার কাজ।