Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জন্য ঘোষণা একাধিক প্রকল্পের, থাকল উন্নয়নের খতিয়ানও

একশো দিনের কাজ নিয়ে ধমক

একশো দিনের কাজে কেন পিছিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, এ নিয়ে শুক্রবার প্রশাসনিক বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নির্দেশ: পৈলানে মমতা। ছবি: সুমন বল্লভ।

নির্দেশ: পৈলানে মমতা। ছবি: সুমন বল্লভ।

দিলীপ নস্কর
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০২:৪৩
Share: Save:

একশো দিনের কাজে কেন পিছিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, এ নিয়ে শুক্রবার প্রশাসনিক বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুকুর কাটা কেন বন্ধ হল, তা তিনি জানতে চান জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাওয়ের কাছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করুন। একশো দিনের কাজের গতি বাড়ান।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫-১৬ আর্থিক বর্ষে যেখানে রাজ্যে একশো দিনের কাজের ক্ষেত্রে ৫২ দিন ছিল রাজ্যে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা, সেখানে ওই বছর দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কাজ হয়েছে মাত্র ৪৩ দিন। পর পর প্রশাসনিক বৈঠকগুলিতে দেখা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ছোটখাট তথ্যও থাকছে। যেগুলি ধরে ধরে প্রশ্ন করছেন তিনি। এবং যা সামলাতে নাকানিচোবানি খাচ্ছেন আমলা-বিধায়ক-জনপ্রতিনিধিরা।

একশো দিনের কাজে হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরিসংখ্যানের কথা উল্লেখ করে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

তবে প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষে এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত গড়ে ২৪ দিন কাজ পেয়েছেন জবকার্ডধারীরা। ওয়েব সাইটের রির্পোট অনুযায়ী, এই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বর্তমানে রাজ্যের মধ্যে এগিয়ে আছে এই জেলাই। এই তথ্যও জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীকে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জেলায় পাঁচটি মহকুমার মধ্যে শহরতলি রয়েছে আলিপুর ও বারুইপুরের কিছু ব্লক। শহর-লাগোয়া ব্লকগুলিতে শ্রমিকেরা কলকারখানায় কাজে যাওয়ায় একশো দিনের কাজে অনীহা আছে তাঁদের। ফলে মূলত, ডায়মন্ড হারবার, ক্যানিং ও কাকদ্বীপ— তিনটি মহকুমা এলাকায় একশো দিনের কাজ হচ্ছে। কিন্তু তাতে কমে যাচ্ছে জেলার গড় হিসেব।

এ ছাড়াও, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

ওই প্রকল্পে মজুরি এবং কাঁচামাল কেনার টাকার ৭৫ শতাংশ দেয় কেন্দ্র। রাজ্য সরকার দেয় ২৫ শতাংশ। দীর্ঘ দিন ধরে কেন্দ্র বকেয়া টাকা আটকে রাখে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ঠিকাদারেরা যেমন টাকা পাচ্ছেন না, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরিও দেওয়া যাচ্ছে না।

সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার কোথাও কোথাও আবার ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা জন্য টাকা ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, ‘‘কোন ভরসায় কাজ করাব? বকেয়া টাকা তো পাচ্ছি না। এ দিকে, বেনিফিসিয়ারিরা টাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন। আগের টাকা শোধ না হলে কেউ কাজও করতে চাইছে না।’’

তবে প্রশাসনের এক কর্তা জানালেন, ইতিমধ্যেই কর্মদিবস বাড়ানোর জন্য জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ, এমনিতেই বর্ষা এসে গেলে মার খাবে প্রকল্পের কাজ।

সহ প্রতিবেদন: সামসুল হুদা ও শান্তশ্রী মজুমদার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE