Advertisement
E-Paper

গণেশ পুজো ঘিরে সম্প্রীতির মেলবন্ধন

পুজো শেষে প্রসাদের লাইনে, বিসর্জনেও জাহাঙ্গির, আসরাফরা হাজির। কাঁকিনাড়া বাজারের এই ছবি শুক্রবার সন্ধ্যায় চোখে পড়ল কামারহাটি, বরাহনগর, গারুলিয়াতেও।

বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০৬:৩০
গণেশ: কাঁকিনাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

গণেশ: কাঁকিনাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

বাজারের পাশে মণ্ডপ। এলইডি আলোয় সেজেছে বাইরেটা। পাশের মঞ্চে গায়কের দল। সাউন্ড সিস্টেমে চলছে গণেশ বন্দনা। গানের তালে তালে নাচছে রোশন, জাহাঙ্গির, আসরাফ, সোনিয়া, সাজিদারা। মাঝে মাঝেই সমস্বরে ডাক ছেড়ে চিৎকার করছে, ‘‘গণপতি বাপ্পা মোরিয়া’’।

পুজো শেষে প্রসাদের লাইনে, বিসর্জনেও জাহাঙ্গির, আসরাফরা হাজির। কাঁকিনাড়া বাজারের এই ছবি শুক্রবার সন্ধ্যায় চোখে পড়ল কামারহাটি, বরাহনগর, গারুলিয়াতেও।

সিদ্ধিদাতার পসার গোটা রাজ্যে হালফিলেরই বলা চলে। তবে অবাঙালি অধ্যুষিত ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে গণেশ পুজোর চল বেশ পুরনো। প্রায় প্রতি ঘরে, দোকানে, বাজারে সিদ্ধিদাতার আরাধনা হয়। গত দশ বছরে টিটাগড়, কাঁকিনাড়ার মারাঠিপট্টির বাইরে বারোয়ারি গণেশ পুজোর প্রসার বেড়েছে। বাঙালিরা তাতে শরিক হচ্ছেন। কত বড় আকৃতির মূর্তি হবে, তা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলে উদ্যোক্তাদের মধ্যে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষও উৎসবের আনন্দে গা মিলিয়েছেন। অধিকাংশ জায়গাতেই শুক্রবার পুজোর পর চার দিন মণ্ডপে মূর্তি থাকে। তারপরে শোভাযাত্রা করে বিসর্জন হয়। ছোটখাট মেলা বসে। অনেকে মানত করেন। গোটা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে এক সময়ে গঙ্গার ধারে চটকলগুলিতে হৈ হৈ করে গণেশ পুজোর চল ছিল। শ্রমিকেরাই কাঁধে করে বিশালাকার গণেশ মূর্তি বয়ে নিয়ে আসতেন কুমোরপাড়া থেকে। পুজোর আয়োজনও করতেন তাঁরাই। গণেশ পুজোর দিন শ্রমিকদের অগ্রিম টাকা দেওয়া হত। দুপুরে খাওয়ানো হতো কারখানাতে। সেই সব চল উঠে গিয়েছে বহু দিন। এখন বারোয়ারি পুজো বেড়েছে।

ভাটপাড়ায় একটি বারোয়ারি গণেশ পুজোর পাশেই দোকান মহম্মদ ইসমাইলের। পুজোতে সামিল তিনিও। বললেন, ‘‘এখন ক’দিন ব্যবসায় মন দিতে পারছি না। পুজোটা আগে ঠিক মতো কাটুক।’’

শিল্পাঞ্চলে গণেশ পুজোয় আর একটি বিশেষত্ব ছিল জুয়ার বোর্ড। অবাঙালিদের আয়োজনে বারোয়ারি পুজোর খরচের মোটা টাকা আয় হত বোর্ড থেকে। কিন্তু প্রশাসনের নজরদারিতে সে সব মোটামুটি বন্ধ। লুকিয়ে-চুরিয়ে কিছু চলে।

ভাটপাড়ার একটি পুজো কমিটির কর্তা ভিকি সিন্ধে বলেন, ‘‘জুয়ার বোর্ড পুজোরই অঙ্গ ছিল। এখন আমরাই বন্ধ করে দিয়েছি ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট এড়াতে। ফলে পুজোর জৌলুস কিছুটা তো কমেইছে।’’

প্রশাসনের খতিয়ান অনুযায়ী ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বারোয়ারি গণেশ পুজোর সংখ্যা প্রায় একশো। এর মধ্যে বড় পুজোগুলির প্রতিযোগিতারও ব্যবস্থা থাকে। সাজসজ্জা, পরিবেশ, পরিকাঠামো সবটা নিয়েই এই প্রতিযোগিতা।

ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘প্রশাসন সব সময়ে সম্প্রীতির আবহে উৎসবকে উদ্‌যাপন করতে চায়। মানুষের মেল বন্ধনে এখানে সেই নজির গড়ে বরাবর।’’

Ganesh Chaturthi Harmony Hindu Muslim গণেশ পুজো
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy