এক পাশে বাঁধা গরু। অন্য পাশে ইতিউতি পড়ে ফাঁকা মদের বোতল, গাঁজার কলকে।
কোনও পরিত্যক্ত বাড়ি নয়, দুষ্কৃতীদের ডেরাও নয়। হিঙ্গলগঞ্জ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে গেলে দেখা যাবে এই ছবি। সন্ধে নামলেই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে নেশাড়ুদের আড্ডা বসে। বিষয়টি জানিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক মধুসূদন মৃধা। তবে সমস্যা মেটেনি।
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হিঙ্গলগঞ্জ বাজার-লাগোয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ১৯৪৭ সালে চালু হয়েছিল। ২০১৪ সালে হাসপাতালে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অপারেশন থিয়েটার চালু হয়। তখন হাসপাতালে ৪ জন চিকিৎসক এবং কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন। কিন্তু বছর দু’য়েকের মধ্যে পরিস্থিতি বদলেছে। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন মধুসূদন মৃধাই হলেন একমাত্র চিকিৎসক। এ ছাড়া, রয়েছেন চার জন নার্স। চিকিৎসকের অভাবে অন্তর্বিভাগ বন্ধ। সপ্তাহে কয়েক দিন বর্হিবিভাগে বসেন মধুসূদনবাবু। অন্য দিন নার্সরাই বর্হিবিভাগ সামলান। পরিকাঠামোর অভাবের সঙ্গেই যোগ হয়েছে হাসপাতাল চত্বরে মদ্যপদের আড্ডা। এ ছাড়াও, রয়েছে হাসপাতাল চত্বরে গাড়ি ঢুকিয়ে জিনিস ওঠানো-নামানোর সমস্যা।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রশান্ত ঘোষ, বাবু হালদার, কল্পনা বাছাড়, বিজিত ঘোষদের ক্ষোভ, ‘‘দুষ্কৃতীরা হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করছে। এলাকায় মদ-গাঁজা বিক্রির বিষয়ে পুলিশের নজরদারি জরুরি। একই সঙ্গে হাসপাতালে পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টিও ভাবা উচিত।’’ হিঙ্গলগঞ্জ বাজার সমিতির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘চিকিৎসকের অভিযোগ ঠিক। কিন্তু ওই হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়েও ভাবনা-চিন্তা করা হোক।’’ তিনি জানালেন, বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীরা এখন ওই হাসপাতালে না গিয়ে দীর্ঘ রাস্তা উজিয়ে ন’নম্বর সান্ডেলেরবিল হাসপাতালে যাচ্ছেন।
মধুসূদনবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে নির্মল বাংলা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। হাসপাতালকেও তো নির্মল রাখা উচিত। হাসপাতাল চত্বরে মদ-গাঁজার আসর বসছে। গরু বেঁধে রাখা হচ্ছে। এই সব ঘটনায় নার্সরা আতঙ্কিত। সমস্যার কথা প্রশাসনের সব জায়গায় জানিয়েছি। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’’
হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘হাসপাতালের পরিবেশ ঠিক রাখতে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। ওই হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্য দফতরে বলা হয়েছে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy