Advertisement
E-Paper

সাপের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে শিক্ষিকা-পড়ুয়া

স্কুলের মাঠে জমে রয়েছে জল। তাতে ভাসছে মশার লার্ভা। জলের মধ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে সাপ। আশেপাশের বাড়ির নোংরা জলও ওই মাঠে এসে পড়েছে।    

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০১:১৪
বেহাল: স্কুলের সামনের মাঠ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

বেহাল: স্কুলের সামনের মাঠ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

স্কুলের মাঠে জমে রয়েছে জল। তাতে ভাসছে মশার লার্ভা। জলের মধ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে সাপ। আশেপাশের বাড়ির নোংরা জলও ওই মাঠে এসে পড়েছে।

প্রতি বর্ষায় গাইঘাটার চাঁদপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ে এমন পরিস্থিতি হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ক্লাসঘরেও সাপ ঢুকে পড়ে। ফলে এই সময়ে কিছু দিন স্কুলও বন্ধ রাখতে হয়। জল শুকোতে প্রায় ছ’মাস সময় লাগে। জল বের করার নিকাশি ব্যবস্থা নেই। সে জন্যই এমন হাল, জানালেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষিকারা জানান, জল জমে থাকার কারণে মশার উপদ্রব শুরু হয়েছে। মশার পাশাপাশি সাপ ও বিষাক্ত পোকা মাকড়ের আনাগোনাও বেড়েছে। পড়ুয়ারা জানায়, সম্প্রতি স্কুলের তিন তলাতেও সাপ ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। ভয়ে তারা আর ক্লাস করতে সাহস পায়নি। সাপের উপদ্রবের কারণে তিন তলায় কয়েক দিন ক্লাস বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

প্রধান শিক্ষিকা ঝুমা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শুধু ক্লাস রুমে নয়, শিক্ষিকাদের স্টাফ রুমেও সাপ ঢুকে পড়ছে। সকলে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। কার্বলিক অ্যাসিড ছড়িয়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।’’

মশার উপদ্রব এতটাই বেশি, ক্লাস রুমে মশা মারার কয়েল ব্যবহার করতে হচ্ছে। কিন্তু কয়েল বেশি ব্যবহার করা পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তা বেশি ব্যবহার করতে পারছেন না। পড়ুয়ারা জানায়, মশা মারতে মারতে ক্লাস করতে হয়। যা খুবই অস্বস্তিকর। সমস্যার কথা শুনে বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমস্যার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর গাইঘাটা ব্লকে জ্বর-ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছিল। কয়েকজন মারাও যান। এ বার স্কুলে ইতিমধ্যে মশার প্রকোপ বাড়াতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকেরাও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১৬০০ জন। স্কুলে মিড ডে মিল খাওয়ার আলাদা কোনও ব্যবস্থা নেই। পড়ুয়ারা মাঠে লাইন করে দাঁড়ায়। সেখানে তাদের রান্না করা খাবার দেওয়া হয়। তারা মাঠে বসে তা খেত। কিন্তু এখন মাঠে জল থাকায় ছাত্রীরা মিড ডে মিল ক্লাস রুমেই খাচ্ছে। তাতে ক্লাসরুমও নোংরা হচ্ছে।

স্কুলের মাঠে জল জমে থাকায় বছরে ছ’মাস বন্ধ থাকে খেলাধুলা। স্কুলে এসে পড়ুয়াদের কার্যত ক্লাসরুমে আটকে থাকতে হয়। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে শারীরশিক্ষা রয়েছে। মাঠে জল জমে থাকায় ওই দু’টি শ্রেণির পড়ুয়াদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে, স্কুল সংলগ্ন রাস্তা উঁচু। আর মাঠ নিচু। ফলে জল বের হওয়ার সুযোগ নেই। স্কুল মাঠের জমা জল সরানোর দাবিতে এবং নিকাশি নালার জন্য স্কুলের তরফে আগে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, ব্লক প্রশাসন, স্কুল শিক্ষা দফতর-সহ সংশ্লিষ্ট সব মহলে একাধিকবার সমস্যার কথা জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘এখন আর কাউকে জানাতে ইচ্ছেও করে না।’’

গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, স্কুলের মাঠ উঁচু করার প্রয়োজন। সমিতির সহ সভাপতি ধ্যানেশনারায়ণ গুহ বলেন, ‘‘স্কুলটির সমস্যা মেটাতে পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বর্ষার পরে মাঠ উঁচু করে নিকাশি নালা তৈরি করা হবে।’’

Fear Snakes School Teachers Students
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy