Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
COVID 19

SFI: সুন্দরবনে সেতুর উপর চলল ক্লাস, স্কুল-কলেজ খোলার দাবি এসএফআইয়ের

কোভিডের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কার আবহে রাজ্যে এখনও স্কুল-কলেজ চালু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২১ ২৩:০৫
Share: Save:

স্কুল খোলার দাবিতে দিন দুয়েক আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের বাইরে ফুটপাতে বসে ক্লাস করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন প়ড়ুয়ারা। ওই একই দৃশ্যই এ বার দেখা গেল সুন্দরবনে। বৃহস্পতিবার কাকদ্বীপের চৌরস্তায় কালনাগিনী সেতুর উপরই চলল প়ড়াশোনা। সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে রাস্তার উপর ক্লাস করতে বসে পড়েন সুন্দরবন মহাবিদ্যালয় ও স্থানীয় স্কুলের পড়ুয়ারা। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় শিক্ষকরাও। প্রায় ঘণ্টাখানেক ক্লাস চলার পর প্রতীকী বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা।
কোভিডের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কার আবহে রাজ্যে এখনও স্কুল-কলেজ চালু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছেন, পুজোর পরই স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যানবাহন, অফিস, পানশালা, রেস্তরাঁ— সমস্ত কিছু খুলে দেওয়া হলেও কেন স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যের জায়গায় জায়গায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। বৃহস্পতিবার বারাসত কালীকৃষ্ণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় সামনে স্কুল খোলার দাবিতে তাদের একটি কর্মসূচি ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনেও কী ভাবে ক্লাস চালানো যায়, প্রতীকী প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে সেই বার্তা দেওয়া হয় ভারতীয় ছাত্র ফেডারেশন বারাসত লোকাল কমিটির তরফ থেকে।

অনলাইনে ক্লাসের পরিবর্তে অফলাইনে ক্লাস চালু করা হোক। এই দাবিতে মেদিনীপুর কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখাল এসএফআই ছাত্র সংগঠন। ছাত্র সংগঠনের সদস্য তথা মেদিনীপুর কলেজের পড়ুয়ারা বলেন, ‘‘অনলাইন ক্লাসে অনেক অসুবিধে হচ্ছে। সামনাসামনি ক্লাস হলে শিক্ষক-পড়ুয়াদের মধ্যে এক ধরনের আদানপ্রদান তৈরি হয়। যা অনলাইনে হয় না। পড়ুয়ারা কী ভাবে অংশ নিচ্ছেন, তা শিক্ষকও দেখতে পাচ্ছেন না।’’ শিক্ষিকা পাপিয়া চৌধুরীর কথায়, ‘‘সব কিছুই চলছে, অথচ স্কুল-কলেজ বন্ধ। এতে সমস্যায় প়ড়ছেন পড়ুয়ারা। শিক্ষকেরা নিজেদের মতো প়ড়িয়ে যাচ্ছেন। ঠিক মতো প্রশ্নও করতে পারছেন না পড়ুয়ারা। পড়ুয়ারা আবার স্কুল কলেজে আসা শুরু করুক। আমরাও যেতে চাই।’’

শহরাঞ্চলে সমস্যা হচ্ছে। নেট ওয়ার্ক সমস্যা হয়, অনেক সময় নেট পাওয়া যায় না। তাতে ক্লাস ঠিক মতো হয় না। বাড়িতে বসে একঘেয়েমির শিকার পড়ুয়ারা। পড়াশুনার চাহিদা আগে যেমন ছিল তা থাকে না। মেদিনীপুর কলেজের মাইক্রো-বায়োলজির ছাত্রদের প্রাকটিক্যাল ক্লাসের সমস্যা হচ্ছে। একটা বছর শেষ হয়ে গিয়েছে। পরবর্তী সময়ে ঘাটতি পূরণ করা যাবে না। অফ লাইন শুরু হোক, অনলাইন বন্ধ হোক। এদিনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে স্কুল শিক্ষিকা পাপিয়া চৌধুরী জানান, একবছরের উপর অতিমারির কারণে সবাই জর্জরিত। এই সময় সব কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে, সব কিছুই চলছে। অথচ ছাত্র ছাত্রীরা সমস্যায় পড়ছে। তাদের মননের জগৎ তৈরির জায়গা বন্ধ। বন্ধ করে রাখা হয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ব বিদ্যালয়। পঠন পাঠনের দিক থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। অনলাইন ক্লাসে অসুবিধে, কারা অংশ নিচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না। শিক্ষক শিক্ষিকারা তাদের মতো করে পড়িয়ে যাচ্ছেন। পড়ুয়াদের জানার জায়গায় অভাব থাকছে। আমরা বিদ্যালয়ে যেতে চাই। পড়ুয়ারা বিদ্যালয়ে আসুক।’’

এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সারা দেশে ৫০ শতাংশ মানুষ অনলাইনের বাইরে। আট শতাংশ পড়ুয়ার বাড়িতে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট আছে। এই সময়ে ড্রপ আউট বেড়েছে। শিশু শ্রমিক, বাল্যবিবাহ এবং পাচার সংখ্যা বাড়ছে। অথচ, এই সময়েই অনলাইন প্রশিক্ষণ সংস্থাগুলি তাদের মুনাফা বাড়াচ্ছে। আমাদের বক্তব্য, সরকার কর্পোরেটের জন্য স্কুল বন্ধ রেখেছে। আমরা চাই, ক্যাম্পাস খোলা হোক। এমনি কথায় চিঁড়ে ভিজবে না। কেন্দ্রীয় সরকার এখন যা করছে, তা জাতীয় শিক্ষা নীতির অঙ্গ। আমাদের দাবি, টিকা দিয়ে স্কুল খুলতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID 19 Sundarban Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE