Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
কাল শুরু মাধ্যমিক

বাড়তি ‘সেন্টার ফি’ গুণতে বাধ্য হচ্ছে বহু পরীক্ষার্থী

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমতির বাইরে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অনেক বেশি ‘সেন্টার ফি’ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে মহকুমার অনেক স্কুলে। বাড়তি টাকার কোনও রসিদও দেওয়া হচ্ছে না।

শান্তশ্রী মজুমদার
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:১৭
Share: Save:

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমতির বাইরে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অনেক বেশি ‘সেন্টার ফি’ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে মহকুমার অনেক স্কুলে। বাড়তি টাকার কোনও রসিদও দেওয়া হচ্ছে না।

বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের জেলা আহ্বায়ক। তবে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিদের দাবি, বোর্ডের ঠিক করে দেওয়া ন্যূনতম টাকায় কোনও আয়োজন করে ওঠা যাচ্ছে না বলেই বাড়তি টাকা তুলতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে।

নামখানার মৌসুনিতে বালিয়াড়া কিশোর হাইস্কুলে ছাত্রছাত্রীদের ৬০ টাকা করে বাড়তি সেন্টার ফি দিতে হচ্ছে। কিন্তু সেখানে কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছে না ছাত্রছাত্রীদের। এই স্কুলে এ বার ১১৫ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। প্রধান শিক্ষক অরিন্দম মাইতি বলেন, ‘‘সেন্টার ফি’র আর কী রসিদ দেবো। দু’এক জন অভিভাবক এসে বলছিলেন, আমরা তাঁদের জানিয়েছি, পুরো টাকাটাই দিয়ে দিই আয়োজক স্কুলকে। তাঁরাই এ সবের হিসেব কষেন।’’ একটি স্কুলের সিট যে স্কুলে পড়ে, সেই স্কুলকেই ‘আয়োজক স্কুল’ বলা হয়।

মাধ্যমিকের আগে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ফর্ম পূরণ করার সময়ে ১৫ টাকা করে পরীক্ষার আয়োজনে নেওয়া হয় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে। কিন্তু তাতে খরচ চালানো মুশকিল বলে পর্ষদের অনুমোদন নিয়েই আরও বাড়তি ২০ টাকা করে ছাত্রদের কাছে সেন্টার ফি হিসেবে আদায় করে স্কুলগুলি। কিন্তু নামখানার কয়েকটি স্কুলে নির্ধারিত অঙ্কের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ, কোথাও তারও বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।

বালিয়াড়া কিশোর হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সিট পড়েছে নামখানা ধনেশ্বর শিক্ষাসদনে। সেখানে পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শুভ্রনীল প্রামাণিক জানালেন, তাঁদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের যে কেন্দ্রে সিট পড়েছে, সেখানে ৭০ টাকা করে নিতে হয়েছে তাদের। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানালেন, এই টাকার রসিদ তাঁরা আগেই দিয়েছেন। কাকদ্বীপের কয়েকটি স্কুলে টাকার অঙ্ক কিছুটা কম হলেও তা পর্ষদের বলে দেওয়া মাত্রার চেয়ে বেশি। কাকদ্বীপে ৩০-৫০ টাকা করে বাড়তি নেওয়া হচ্ছে ‘সেন্টার ফি’ বাবদ। বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি তাদের কমিটির সিদ্ধান্তে এক এক রকম ফি নির্ধারণ করছে।

কেন দিতে হচ্ছে বাড়তি টাকা?

স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের দাবি, পর্ষদের ১৫ টাকা এবং নির্ধারিত সেন্টার ফি হিসেবে আরও ২০ টাকা। মাথা-পিছু মোট ৩৫ টাকা দিয়ে একটি পরীক্ষার্থীর পিছনে যাবতীয় আয়োজন করে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। প্রত্যন্ত এলাকায় খাতা গাড়িতে নিয়ে আসা, জমা করা, স্কুলে শিক্ষক কম থাকলে অন্য স্কুল থেকে শিক্ষকদের গার্ড দিতে নিয়ে আসা, টিফিন খরচ— এ সব ওই টাকায় পোষানো যাচ্ছে না।

শিক্ষকদের এই দাবি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের জেলা আহ্বায়ক অজিত নায়েক মেনে নিলেও পর্ষদের নিয়মের উপরেই জোর দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কয়েকটি প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলে এ রকম সমস্যা থাকতে পারে। তবে যে টাকা ছাত্র-পিছু ওঠে, তা দিয়েই চালাতে হবে। সেন্টার কমিটির বলে দেওয়া ২০ টাকার বাইরে আর টাকা নেওয়া যাবে না।’’ তবে টাকা নেওয়া হলে কেন রসিদ দেওয়া হচ্ছে না, তারও কোনও উত্তর নেই পর্ষদ প্রতিনিধিদের কাছেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik Pariksha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE