গোপালনগরে গণ্ডগোল। সেখানে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন করে প্রকাশ্যে এল। গীতাঞ্জলী আবাস যোজনা নিয়েই এই সঙ্কট। এই কথা সামনে এনেছেন আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট না পাওয়া গোপালনগরের বিদায়ী প্রধান সুভাষ পুরকাইত।
২০১৭ সালেই সুভাষ পুরকাইত এরকম একটি অভিযোগ এনেছিলেন যে, গীতাঞ্জলি আবাস যোজনায় যাঁদের ঘর পাওয়ার কথা ছিল, তাঁরা পাননি। পেয়েছেন যাঁরা প্রভাবশালী এবং এক হিসেবে বিত্তশালীও, তাঁরাই। তাঁর এই অভিযোগের সূত্রে গোপালনগরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আকচা-আকচির ছবিটা হঠাৎই সামনে চলে এসেছে। এতে জড়িয়ে পড়েছে এলাকার তৃণমূল বিধায়ক সমীর জানার নামও। সুভাষবাবুর অভিযোগ, গোপালনগরে গীতাঞ্জলী-সহ অন্যান্য আবাস যোজনায় বিডিওর নির্দেশ প্রায় উপেক্ষা করেই প্রাপকদের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। সুভাষবাবু জানান, ‘‘এ সব তালিকা পঞ্চায়েতেরই ঠিক করার কথা। কিন্তু সেটা আমাদের করতে না দিয়ে অঞ্চল সভাপতির মাধ্যমে সেসব ঠিক করেন পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীরবাবু।’’ তাঁর কথায়, দলের প্রভাবশালীরা ঘর পেয়ে যাচ্ছেন। ঘর যাঁরা পাচ্ছেন তাঁদের কারও পাকা বাড়ি, বাইক, কারও চাকরি এবং পেনশনও রয়েছে।
সুভাষবাবুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে গোপালনগরের অঞ্চল সভাপতি সুখদেব ভুঁইয়া বলেন, ‘‘রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হয়েছি। এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। টিকিট না পেয়েই এ সব অভিযোগ তোলার চেষ্টা করছেন সুভাষবাবু।’’ বিদায়ী প্রধান সুভাষবাবুর অবশ্য দাবি, এরকম ২৭ জন প্রাপক সম্পর্কে এক বছর আগেও বিডিও অফিসে জানানো হয়েছিল। নেতারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, এগুলি দেখে মিটিয়ে ফেলা হবে।
কিন্তু তখন কেন সুভাষবাবু প্রতিবাদ করেননি? প্রশ্ন শুনে সুভাষবাবু বলেন, তিনি তখন দলের ভাবমূর্তির কথা ভেবেই চুপ করে ছিলেন।এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে পাথরপ্রতিমার বিধায়ক পাল্টা আঙুল তুলেছেন সুভাষবাবুর দিকেই। সমীরবাবুর দাবি, দল যখন সুভাষ পুরকাইতকে প্রধান করে, তখন তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। দলের সমস্ত সুবিধা ভোগ করে, গাড়ি-বাড়ি করে কেউ যদি এ সব দাবি তোলেন, তা হলে তাঁর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়েছে বলেই ধরে নিতে হবে। সমীরবাবু জানান, ‘‘গত দশ বছর সুভাষ পুরকাইত প্রধান ছিলেন। মনোনয়নের আগে এখন হঠাৎ এ সব কথার মানে কী?’’ তাঁর দাবি, টিকিট পাচ্ছে না ইঙ্গিত পেয়েই বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এসব করার চেষ্টা করছেন সুভাষবাবু।
শাসক দলে কাদা ছোড়াছুড়ির এই ঘটনায় অবশ্য অক্সিজেন পেয়েছে বিরোধীরা। গোপালনগরের জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি স্বপনকুমার দাস বলেন, ‘‘মরা মানুষের ঘর হয়েছে। ঘর পাওয়া মানুষ আবার ঘর পেয়েছেন। পুরনো ইট দিয়ে কাজ হয়েছে। গোপালনগর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সকলেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে। অভিযোগও জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও তদন্ত হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy