Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আধুনিক টাকি গড়তে চাই শিল্প, উচ্চশিক্ষার পরিকাঠামো

যে পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে টাকির নামডাক গোটা রাজ্যে, সেই পর্যটন নিয়েও কিন্তু সমস্যা ও অভিযোগ আছে। টাকি-হাসনাবাদের গেস্ট হাউসগুলিতে অনৈতিক কাজকর্মের অভিযোগ নানা সময়ে উঠেছে। যে বহিরাগতেরা আসেন, তাঁদের নিরাপত্তা নিয়েও ভাবার দরকার আছে।

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৪ ০২:০৬
Share: Save:

যে পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে টাকির নামডাক গোটা রাজ্যে, সেই পর্যটন নিয়েও কিন্তু সমস্যা ও অভিযোগ আছে।

টাকি-হাসনাবাদের গেস্ট হাউসগুলিতে অনৈতিক কাজকর্মের অভিযোগ নানা সময়ে উঠেছে। যে বহিরাগতেরা আসেন, তাঁদের নিরাপত্তা নিয়েও ভাবার দরকার আছে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, পর্যটকেরা নিজেরাই অনেক সময়ে গোলমালে জড়িয়ে পড়েন। সে সব রুখতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা দরকার বলে মানেন শহরবাসী। ইতিমধ্যে হাসনাবাদে ইছামতীর ধারে নজরুল সৈকতের অবস্থা রীতিমতো বিপজ্জনক। ওই পার্কের একটি অংশ নদীর জলে ভেঙে পড়েছে। টাকি স্টেশনে নেমে পর্যটকেরা সাধারণত রিকশা করে থুবা হয়ে আসেন টাকির ইছামতী সংলগ্ন গেস্ট হাউসে। ওই রাস্তাটি অত্যন্ত অপরিসর। অধিকাংশ সময়ে যানজট লেগে থাকে। রাস্তা সম্প্রসারণ দরকার। বিকল্প রাস্তা হিসাবে হাসনাবাদ থেকে মানসিংহ রোড ধরে টাকি হয়ে জালালপুর যাওয়া যেতে পারে। বিকল্প হিসাবে স্টেশন থেকে বিনয় বসু সরণী হয়ে টাকি রাস্তায় ওঠা সম্ভব। আবার টাকি, জালালপুর, পশ্চিম ব্যাওকাটি হয়ে বসিরহাট বদরতলায় ওঠা যায়।

শহরের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ আছে। আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল এখনও পৌঁছয়নি সর্বত্র। একশো পঁয়তাল্লিশ বছরের পুরনো টাকি পুরসভা এখনও বাড়ি বাড়িত পানীয় জলের ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি।

এলাকায় কোনও বড় শিল্প গড়ে ওঠেনি। কুটিরশিল্পের বিকাশও হয়নি। না আছে বিএড কলেজ, না আছে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। ফলে উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতামুখী হতেই হয় এখানকার ছেলেমেয়েদের।

ওঁরা বলেন...

সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।

২০০৬ সালে কাঠাখালি নদীর উপরে হাসনাবাদ সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। কথা ছিল তিন বছরের মধ্যে শেষ হবে সেই কাজ। সেতুটি তৈরি হলে হাসনাবাদের সঙ্গে টাকি শহরাঞ্চলের যোগাযোগ মসৃণ হত। এলাকায় জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন হত বলেও মানুষের আশা। কিন্তু সেই কাজ এখনও শেষ হয়নি। আট বছরে ১০ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি সেতুর দু’টি পিলারের তলা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বহু টাকা খরচ করে সে সব ভেঙে নতুন নির্মাণ করতে হবে। সে কাজ যে কবে শেষ হবে, তা কেউ জানে না।

হাসনাবাদ থেকে টাকির জালালপুরের মধ্যে টাকির দিকে ইছামতীর পাড় ভাঙছে। উল্টো পাড়ে আবার নদীতে চরা পড়ছে। এ ভাবে নদীর দিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। যার জেরে যে কোনও সময়ে টাকি-হাসনাবাদে নদীপাড়ে বড় ভাঙন দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা। তেমনটা হলে কেবল ওই দু’টি এলাকাই নয়, নোনা জলে প্লাবিত হবে বসিরহাটের বিস্তীর্ণ অংশ। সে কারণে টাকির দিকে বাঁধ মেরামতি অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

এ ছাড়া, গোটা বসিরহাট মহকুমার নানা প্রান্তে গরু পাচারের যে সমস্যা, তার জন্য ভুগতে হয় টাকিকেও। মূলত হাসনাবাদ সীমান্ত দিয়ে চলে পাচার। কিন্তু গরু নিয়ে টাকির উপর দিয়ে গিয়ে গিয়ে জালালপুর দিয়েও পাচার হয়। ফসলের খেতও নষ্ট হয়। দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বাড়ে।

সমস্যা যেমন আছে, আছে সম্ভাবনাও। সব মিলিয়ে টাকিকে নিয়ে বহু স্বপ্ন এলাকার মানুষের।

(শেষ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE