Advertisement
E-Paper

এ বার পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে এল হুমকি ফোন

ফুলরেণু সরকার খুনের রহস্য আরও ঘণীভূত হল। খুনের কিনারা চেয়ে ‘বাড়াবাড়ি করলে’ একই পরিণতি হতে পারে বলে টেলিফোনে হুমকি দেওয়া হল সান্ডেলেরবিল পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শিপ্রা গায়েনকে। তাঁর স্বামীর মোবাইলে মঙ্গলবার ফোনে এক ব্যক্তি হুমকি দেয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০২:০৫
গ্রামে চলছে পুলিশি টহল। নিজস্ব চিত্র।

গ্রামে চলছে পুলিশি টহল। নিজস্ব চিত্র।

ফুলরেণু সরকার খুনের রহস্য আরও ঘণীভূত হল।

খুনের কিনারা চেয়ে ‘বাড়াবাড়ি করলে’ একই পরিণতি হতে পারে বলে টেলিফোনে হুমকি দেওয়া হল সান্ডেলেরবিল পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শিপ্রা গায়েনকে। তাঁর স্বামীর মোবাইলে মঙ্গলবার ফোনে এক ব্যক্তি হুমকি দেয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

নাম জানাতে অনিচ্ছুক পঞ্চায়েতের এক সদস্য বলেন, “ফুলরেণুকে খুনের বিষয়ে সমস্ত রকম সাহায্য করা সত্ত্বেও পুলিশ যে ভাবে তাদের আড়াল করে চলেছে, তাতে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। আর এই সুযোগে যাকে তাকে হুমকি দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। তাই নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”

গত ১৩ জুলাই রাতে হিঙ্গলগঞ্জের সান্ডেলেরবিল শ্রীরামকৃষ্ণ সেবা মিশনের গদাধর পাটশালার শিক্ষিকা ফুলরেণুদেবীকে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এরপর কেটে গেছে বেশ কয়েকটা দিন। গ্রামবাসীদের পক্ষে দুষ্কৃতী গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের সর্বস্তরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে সোমবারই জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ বাধে। পুলিশকে পেটানো হয়। গাড়িতে ভাঙচুর চলে। সেই অভিযোগে গ্রেফতারও হয় কয়েক জন।

কিন্তু এখনও পর্যন্ত শিক্ষিকাকে খুনে জড়িত একজনকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। এরই মধ্যে সান্ডেলেরবিল পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শিপ্রা গায়েনের স্বামী তপনববাবুর মোবাইলে হুমকি ফোন পরিস্থিতিকে আরও ঘোরাল করল। শিপ্রাদেবী বলেন, ‘‘ফোনে বলা হয়েছে, আমি যেন শিক্ষিকার খুনের বিষয়টি নিয়ে কোনও রকম বাড়াবাড়ি না করি। তা হলে আমারও ওই শিক্ষিকার মতো পরিণতি হবে।”

শিপ্রাদেবী জানান, ফুলরেণুদেবীর সঙ্গে আমরা এক সঙ্গে মন্দিরে গান করতাম। এক সঙ্গে সংগঠন করতাম। দোষীদের গ্রেফতারের জন্য একটু বেশিই তৎপর হয়েছি। সে কারণেই আমাকে হুমকি দেওয়া হল।” বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন ওই পঞ্চায়েত সদস্য।

এ দিকে সোমবারের ঘটনার পরে এখনও পুলিশি টহল আছে কনেকনগর কাঁটাবাড়ি এলাকায়। স্থানীয় কয়েক জনকে বলতে শোনা গেল, “খুনিরা ধরা পড়ল না। অথচ, যারা খুনিদের গ্রেফতারের জন্য প্রতিবাদে সামিল হলেন, সেই সব নিরীহ মানুষের উপরে লাঠি চালাল পুলিশ। গ্রেফতার করা হল তাঁদের।”

সম্প্রতি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে অশান্তি বেধেছে হিঙ্গলগঞ্জে। খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে দলের কোনও অংশ মদত দিচ্ছে কিনা, সেই সন্দেহ দানা বাঁধছে। দলের এক গোষ্ঠীর নেতাদের সোমবারের বিক্ষোভে সামনের সারিতে দেখা যাওয়ায় সেই সন্দেহ আরও বড় আকার নিয়েছে। খুনের ঘটনায় কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির হাত আছে কিনা, সে প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকার বাতাসে। সোমবার সংঘর্ষের পরে ওসি মনিরুল ইসলাম মাইকে বলেছিলেন, “এই খুনের বিষয়টি যথেষ্ট রহস্যজনক। এখানে আপনাদের মধ্যে কেউ আসামী থাকতে পারে, যে ভিড়ের মধ্যে থেকে নাটক করছে। ফুলরেণুদেবীর বাড়ির পাশে কয়েক জন যুক্ত আছে বলে সম্পূর্ণ প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত তাদের গ্রেফতার সম্ভব হচ্ছে না।’’

এই বক্তব্য সাধারণ মানুষের জল্পনাকে আরও উস্কে দিয়েছে। স্বস্তিকা ঘোষ, রবিউল ইসলাম, অসীমা দাসরা বলেন, ‘‘পুলিশ বলছে, আমাদের মধ্যেই নাকি খুনের আসামী ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন কথা শুনলে তো আতঙ্ক আরও বাড়বে।” এই বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ওসি যখন জানতে পেরেছেন কে খুন করেছে, তখন অবিলম্বে তাকে ধরা হচ্ছে না কেন?”

southbengal basirhat phulrenu murder case hingalganj
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy