সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়া এবং খাপছাড়া বৃষ্টি।
কোনও রকম ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ দুই ২৪ পরগনায় এটুকুই যা ছাপ রেখে গেল রবিবার। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন গ্রামবাসীরা। তবে, বৃষ্টি এখনও কত দিন চলবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গিয়েছে অনেকেরই।
পাঁচ বছর আগে আয়লার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা এখনও গেঁথে রয়েছে সুন্দরবন এলাকার বহু গ্রামবাসীর মনে। সে বার উপড়ে পড়েছিল বড় বড় গাছ। ভেঙে পড়েছিল বাড়ি। বিস্তীর্ণ এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। মৃত্যুও হয়েছিল অনেকের। তাই এ বার আবহাওয়া দফতর হুদহুদ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করার পর থেকেই রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছিলেন সুন্দরবন-সহ উপকূলবর্তী এলাকার গ্রামবাসীরা।
রবিবার দুপুরে হুদহুদ আছড়ে পড়ল ওড়িশা-অন্ধ্র উপকূলবর্তী এলাকায়। কিন্তু দুই ২৪ পরগনায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য জানিয়েছেন, হুদহুদের জেরে সোমবার পর্যন্ত জেলার খাদ্য দফতরের সব অফিস এবং মহকুমাশাসকের দফতরের কন্ট্রোল-রুম দিনরাত খোলা রাখা হবে। কেরোসিন তেল, পলিথিন এবং চাল ,ডাল, আটা-সহ খাদ্যসামগ্রী মজুত রাখার পাশাপাশি জরুরি প্রযোজনে নদীপথে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছনোর জন্য স্পিডবোট রাখা হয়েছে। বসিরহাটের মহকুমাশাসক শেখর সেন জানান, ফ্লাড সেল্টার তৈরি রাখার পাশাপাশি পলিথিন, পানীয় জল-সহ বিপর্যয় মোকাবিলায় সব রকম ভাবে প্রশাসন তৈরি। তবে, রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সুন্দরবন এলাকায় মাঝে মধ্যে ঝড়বৃষ্টির খবর মিললেও বড় কোনও বিপর্যয়ের খবর নেই।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের উপকূলবর্তী এলাকায় শনিবার দিনভর সতর্কবার্তা প্রচার করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের যাতে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে না হয় তার জন্য তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হওয়ায় দিনের শেষে প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য এ নিয়ে কিছুটা স্বস্তিতে।
কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক অমিত নাথ জানান, হুদহুদের প্রভাব সুন্দরবন এলাকায় সে ভাবে পড়েনি। সমস্ত নদী ও সমুদ্রের উপকুলবর্তী এলাকায় নজরদারি রাখা হয়। শুধু নামখানায় মৌসুনি দ্বীপে জলোচ্ছ্বাসে সমুদ্রবাঁধ উপছে জল ঢোকে কিছু এলাকায়।
ক্যানিংয়ের ব্লক অফিসেও কন্ট্রোল-রুম খোলা হয়েছিল। বিপর্যয় মোকাবিলা দলও বহাল ছিল। সমস্ত ব্লক এবং পঞ্চায়েতে পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। পর্যটকদের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল বেলা ১২টার পর না বেরনোর জন্য। সতর্ক করা হয়েছিল মৎস্যজীবীদের। যাঁরা মাছ ধরতে যান, তাঁদের ফিরিয়ে আনা হয়। নদীপথে প্রশাসনের তরফে নজরদারি চালানো হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য গোসাবা-গদখালি ফেরি চলাচল বেলা ২টোর পর থেকে ঘণ্টা খানেকের জন্য বন্ধ ছিল বলে জানায় প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy