অবৈধ ভাবে বাংলাদেশিদের এ পারে এনে জাল পাসপোর্ট-ভিসা তৈরি করে তাদের বিদেশে পাঠানোর কাজ সামলাত একটি অসাধু চক্র। তাদেরই অন্যতম চাঁইকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশের দাবি, নারী ও শিশু পাচার-সহ সীমান্তের ও পার থেকে আসা কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের এ পারে থাকার জন্য জাল রেশন কার্ড, গাড়ির লাইসেন্স, পরিচয়পত্রের ব্যবস্থাও করে দিত ওই ব্যক্তি।
বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার বিকেলে পুলিশ স্বরূপনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে। রাতে উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাকে। রাজ্যের গোয়েন্দা দফতর-সহ ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশের লখনউ থেকেও বসিরহাটে একটি দল আসছে কালামকে জেরা করতে। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দেশের একাধিক থানায় অভিযোগ আছে ওই ব্যক্তির নামে। তথ্য নকল এবং পাচার করার মতো সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। এর বেশি এখন কিছু বলা সম্ভব নয়।” ধৃত ব্যক্তিকে সোমবার বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে চার দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্প্রতি গোয়েন্দারা খবর পান, বাংলাদেশ সীমান্ত-লাগোয়া বেশ কয়েকটি এলাকায় স্কুল করে উগ্রবাদীরা তাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সেখানে প্রশিক্ষিত কেউ কেউ সীমান্ত পেরিয়ে এ পারে ঢুকে পড়ছে বলেও মনে করছেন গোয়েন্দারা। দেশ বিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্তদের সীমান্ত পার করে এ পারে আনার পরে নকল পাসপোর্ট-ভিসা করে তাদের ভিন দেশে কিম্বা রাজ্যের অন্যত্র পাঠিয়েছে বলে জেরায় আবুল কালাম স্বীকার করেছেন বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশের দাবি, এ সব অপকর্মের পাশাপাশি কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি কিশোরীদের এ পারে আনার পরে বহু টাকার বিনিময়ে তাদের রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত-সহ ভিন দেশেও পাঠানোর কাজে যুক্ত ছিল আবুল কালাম। স্বরূপনগর তো বটেই রাজ্যের বিভিন্ন থানায় তার নামে নানা অভিযোগ আছে। স্বরূপনগর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে উঠে পালানোর সময়ে তাকে ধরে ফেলে পুলিশ। বছর ষাটেকের কালাম নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়ে জায়গা বদলে বদলে থাকত। সে জন্যই এত দিন পুলিশ কিছুতেই তার খোঁজ পাচ্ছিল না।