গাইঘাটার আংরাইলের পরে এ বার বাগদার পশ্চিম কুলিয়া গ্রাম। বাংলাদেশি পাচারকারীদের হামলায় মাথা ফাটল চাষির।
বুধবার ভোর রাতে বাংলাদেশের মাটলে গ্রাম থেকে শ’খানেক গরুপাচারকারী কোদালিয়া নদী পেরিয়ে ওই গ্রামে এসে হামলা চালায়। ওই দিনই গ্রামের চাষিরা দু’জন বাংলাদেশি গরুপাচারকারীকে আটকে রেখেছিলেন। হামলা চালিয়ে তাদের ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। আহত হন জনাদশেক গ্রামবাসী। খগেন শিকদার নামে বছর পঞ্চান্নর এক চাষির মাথা ফেটে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে তাঁর মাথায়। গুরুতর আহত হয়েছেন বিশ্বজিৎ দত্ত, শ্যামল বিশ্বাস, ঝন্টু বিশ্বাস নামে বেশ কয়েকজন চাষি। তাঁদের বাগদা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাগদা থানাতেও অভিযোগ করা হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। যৌথ ভাবে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। ও দেশ থেকে পাচারকারীদের ঢোকা বন্ধ করতেও পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
বেশ কিছু দিন আগে আংরাইল সীমান্তেও একই ভাবে হামলা চালানো হয় এক আরপিএফ জওয়ানের বাড়িতে। কুপিয়ে খুন করা হয় ওই জওয়ানকে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার চাষের খেতের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে পাচারের গরু নিয়ে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। চাষিরা প্রতিবাদ করায় পাচারকারীরা রাতের অন্ধকারে খেতের উপর দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়া আসা শুরু করেন। সম্প্রতি চাষিরা একজোট হয়ে রাত জেগে খেতের ফসল পাহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বুধবার ভোর ৩টে নাগাদ খেতের উপর দুই গরুপাচারকারীকে তাড়া করে পাকড়াও করেন তাঁরা। চারটি গরুও আটকে রাখা হয়। মুহূর্তের মধ্যে ও দেশের পাচারকারীদের কাছে খবর চলে যায়। তারা লাঠি রড ও অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। নিরস্ত্র গ্রামবাসীরা তাদের ঠেকাতে ব্যর্থ হন। গ্রামবাসীদের বেধড়ক মারধর করে তারা। যাওয়ার সময়ে হুমকিও দিয়ে যায় তারা। ঘটনার পরে অবশ্য রণঘাট ক্যাম্প থেকে বিএসএফ জওয়ানেরা গিয়ে দু’টি গরু নিয়ে এসে এলাকায় রেখে দেন, যাতে পরবর্তীকালে পাচারকারীরা এলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। পরপর এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে। গ্রামবাসীদের দাবি, জওয়ানেরা নিজেরাই পাচারকারীদের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকেন। প্রয়োজনে গুলিও চালাতে পারেন না তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy