Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বন্‌ধে স্কুল সচল রেখে ঐতিহ্য বজায় রাখল চাঁপাপুকুরের স্কুল

বন্‌ধ মানে ছুটি নয়। সব রাজনৈতিক দলের ডাকা বন্‌ধে সচল থাকাই বসিরহাটের চাঁপাপুকুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেসের ডাকা বাংলা বন্‌ধেও সেই ঐতিহ্য বজায় থাকল।

বদলায়নি ছবিটা। অন্য দিনের মতো মঙ্গলবার বন্‌ধের দিনেও চাঁপাপুকুর মাধ্যমিক স্কুলে হয়েছে পঠনপাঠন। — নিজস্ব চিত্র।

বদলায়নি ছবিটা। অন্য দিনের মতো মঙ্গলবার বন্‌ধের দিনেও চাঁপাপুকুর মাধ্যমিক স্কুলে হয়েছে পঠনপাঠন। — নিজস্ব চিত্র।

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৮
Share: Save:

বন্‌ধ মানে ছুটি নয়।

সব রাজনৈতিক দলের ডাকা বন্‌ধে সচল থাকাই বসিরহাটের চাঁপাপুকুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেসের ডাকা বাংলা বন্‌ধেও সেই ঐতিহ্য বজায় থাকল।

আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা বন্‌ধে এলাকার অন্যান্য স্কুলে পঠনপাঠন না হলেও চাঁপাপুকুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল বরাবরই ব্যতিক্রম। প্রায় প্রতিটি বন্‌ধেই এই স্কুলে স্বাভাবিক পঠনপাঠন হয়েছে। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ দিন ওই স্কুলে ছাত্র ও শিক্ষক উভয়েরই হাজিরা ছিল স্বাভাবিক। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিজুল ইসলাম বলেন, ‘‘এ দিন বন্‌ধ উপেক্ষা করে ৭০ শতাংশের বেশি পড়ুয়া স্কুলে এসেছিল। নির্দিষ্ট রুটিন মেনেই ক্লাস হয়েছে। ৪৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ৪৫ জন উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য মিড ডে মিলের রান্নাও হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, আগে বন্‌ধ মানেই ছিল অলিখিত ছুটি উপভোগ করা। কিন্তু তাঁদের স্কুলের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা কেউই কর্মদিবস নষ্ট করতে চান না। এটা জেনে বন্‌ধ সমর্থকেরা স্কুল খোলা রাখতে বাধা দেয় না।

এ দিন ওই স্কুলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রায় প্রতিটা ক্লাসেই ছাত্রছাত্রী ভর্তি। তাদের অনেকেই এসেছে ৭-৮ কিলোমিটার দুরে কচুয়া, গৌরিভোজ, চাপালি, গাঁড়াকপি, চাঁপাপুকুর, রাজেন্দ্রপুর গ্রাম থেকে। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানালেন, ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন থাকায় স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয়েছে। তবে তাতে কোনও অসুবিধা হয়নি। হুগলির শ্রীরামপুর থেকে আসেন জীববিদ্যার শিক্ষিকা দীপান্বিতা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘বন্‌ধের নামে কাজ বন্ধ রেখে সমস্যার সমাধান হয় না। সপ্তাহের অন্যান্য দিনের মতোই বন্‌ধের দিনেও কাজ করতে ভাল লাগে।’’ শারীরশিক্ষার শিক্ষিকা সঙ্গীতা বিশ্বাসের বাড়ি বনগাঁতে। তাঁর দাবি, ‘‘একটা দিন কাজ বন্ধ রাখলে মানুষের অনেক ক্ষতি হয়। একজন শিক্ষিকা হিসেবে সেই কাজ সমর্থন করতে পারি না।’’ বারাসত থেকে আসা বাংলার শিক্ষিকা জয়িতা দেবনাথ, বেড়াচাঁপা থেকে আসা ভূগোলের শিক্ষক সেলিম ইসলাম, অঙ্কের শিক্ষক সনৎ নাথ একযোগে জানালেন, বন্‌ধ করে কারও উপকার হয় না। বরং দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের ক্ষতি হয়। তাই যে কোনও বন্‌ধের বিরোধিতা করতেই স্কুলে আসেন তারা।

ছুটির পরে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া জিনিয়া সুলতানা, সেহান আহমেদ ঈশিতা পারভিনরা জানায়, তাদের কোনও বন্‌ধেই ছুটি দেওয়া হয় না। তাদের কথায়, ‘‘বন্‌ধ হলে বাবা-মা বাড়িতে থাকতে বলেন না। শিক্ষকেরাও ছুটির কথা বলেন না। ক্লাসে পড়াশোনার পরে টিফিনে বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করতে ভাল লাগে। তাই কোনও বন্‌ধে বাড়িতে থাকি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE