গাড়ি আটকে জুলুম।—নিজস্ব চিত্র।
সকাল ১০টা। বাসন্তী থানার কাছেই বাসন্তী ক্যাথলিক গির্জার সামনে জনা পাঁচ-ছয় যুবক কোনও এক মেলার নামে বিল-বই ছাপিয়ে যানবাহন থামিয়ে চাঁদা তুলছেন। শীত পড়তেই সুন্দরবনে যাতায়াত শুরু হয়েছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। চাঁদার জুলুমের হাত থেকে ছাড় পাচ্ছেন না তাঁরাও।
সকাল থেকেই রিকশা, মোটরভ্যান, অটো, ট্রেকার এবং পর্যটকদের গাড়ি থেকে চলছে চাঁদা তোলা। পর্যটকদের পকেটের অবস্থা বুঝে ঠিক হচ্ছে টাকার অঙ্ক। কেউ টাকা দিতে অস্বীকার করলে ভেসে আসছে কটূক্তি। এক বিদেশি পর্যটকের গাড়ির চালক ওই যুবকদের বলেই বসলেন, “আপনারা যে ভাবে জোর করে চাঁদা তুলছেন, সুন্দরবন এলাকার মানুষের সম্পর্কে বিদেশিদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছবে। যা দিচ্ছি নিন। জোর করবেন না।” প্রায় বেলা দু’টো পর্যন্ত চলে এই জুলুম। এক স্থানীয় শিক্ষক বলেন, “প্রতি বছরেই বড়দিন উপলক্ষে এখানে মেলা হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে এ ভাবে চাঁদা তোলা অন্যায়। এ রকম চলতে থাকলে এলাকার মানুষেরই ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।” বাসন্তী থানার পুলিশ খবর পেয়ে টহলদারি গাড়ি নিয়ে ওই এলাকায় পৌঁছন মাত্র অবশ্য যুবকেরা পালিয়ে যায়।
কল্যাণী থেকে বেড়াতে এসেছিলেন, সন্দীপন চক্রবর্তী ও প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তী। তাঁরা বলেন, “এত দিন দেখতাম, শুধু পুজোর সময়েই চাঁদা তোলা হয়। এখন দেখছি যে কোনও উত্সবেই চাঁদা তোলাটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। সুন্দরবন বেড়াতে এসে নতুন অভিজ্ঞতা হল। বড়দিনের মেলা উপলক্ষেও চাঁদা নেওয়া হচ্ছে।” বাসন্তী-গদখালি রুটের এক অটো চালক বলেন, “সকাল থেকেই পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে চাঁদার জুলুম চলছে। এ দিকে পুলিশের কোনও হেলদোল নেই। পরিত্রাণেরও উপায় নেই। বাধ্য হয়ে চাঁদা দিতে হয়।” রিকশা চালক লালবাবু মোল্লা বলেন, “বাসন্তী বাজার থেকে মাল নিয়ে শিবগঞ্জ বাজারে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ওরা সে সব শুনল না। জোর করে চাঁদা আদায় করল।”
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “সারা দিনই আমাদের গাড়ি ওই এলাকায় ঘোরে। আমাদের নজরদারি এড়িয়ে কোনও ভাবে চাঁদা তুলেছে। ওদের খোঁজ করছি, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy