Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, সভায় বললেন লকেট

মাঠে ভিড় করেছিলেন বেশিরভাগ মহিলারা। পাশাপাশি ছোটদেরও দেখা গিয়েছে। কিন্তু মাঠে একচুলোও জায়গা নেই। মঞ্চ থেকেই ভিড় দেখে আপ্লুত সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। সোমবার স্বরূপনগরের দত্তপাড়ায় বিজেপি-র এই সভায় লকেট বলেন, “দলে রাজনীতি করতে চাই না। মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সে কারণেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।” লকেট জানান, পরিবর্তন চেয়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু এত দিনে কোনও পরিবর্তন দেখতে পাননি। লকেটের কথায়, “বাংলার মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কিন্তু খুনোখুনি, রক্ত দিয়ে বেশিদিন রাজত্ব করা যায় না।

শমীক ভট্টাচার্যের পাশে লকেট। ছবি: নির্মল বসু।

শমীক ভট্টাচার্যের পাশে লকেট। ছবি: নির্মল বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
স্বরূপনগর ও বনগাঁ শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩২
Share: Save:

মাঠে ভিড় করেছিলেন বেশিরভাগ মহিলারা। পাশাপাশি ছোটদেরও দেখা গিয়েছে। কিন্তু মাঠে একচুলোও জায়গা নেই। মঞ্চ থেকেই ভিড় দেখে আপ্লুত সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়।

সোমবার স্বরূপনগরের দত্তপাড়ায় বিজেপি-র এই সভায় লকেট বলেন, “দলে রাজনীতি করতে চাই না। মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সে কারণেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।” লকেট জানান, পরিবর্তন চেয়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু এত দিনে কোনও পরিবর্তন দেখতে পাননি। লকেটের কথায়, “বাংলার মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কিন্তু খুনোখুনি, রক্ত দিয়ে বেশিদিন রাজত্ব করা যায় না।

ওই সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি, সর্বভারতীয় নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য, কেডি বিশ্বাস এবং প্রার্থী সুব্রত ঠাকুর উপস্থিত ছিলেন।

উপচে পড়া ভিড় দেখে খুশি নকভি বলেন, “এখানে মূল প্রয়োজন রোজগার এবং সুরক্ষা।” তাঁর কথায়, “ওরা (তৃণমূল) ভোট নেয় অথচ মানুষকে দেখে না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্কুল-কলেজ কোনও বিষয়েই কোনও চিন্তা নেই। শমীকবাবু বলেন, “হানাহানি বন্ধ করে রাজ্যে, শান্তি এবং নিরাপত্তা চাইলে বনগাঁয় বিজেপি প্রার্থীকে জয়ী করতে হবে।” তাঁর কথায়, “তৃণমূল সরকার দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারিতে ছেয়ে গিয়েছে। মানুষের কাছে ওরা বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে।”

এ দিন ঠাকুরনগরে সুব্রত ঠাকুরের প্রচার সভায় প্রথম বার দেখা গেল তাঁর বাবা, সদস্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণকে। তিনি বলেন, “যখন উদ্বাস্তু দফতরের মন্ত্রী ছিলাম, ওরা (তৃণমূল) সে দিকে তেমন নজর দেয়নি। তবে কিছু কাজ হয়েছে।” তাঁর দাবি, তৃণমূলের আশি শতাংশ লোকই খারাপ। যে কুড়ি শতাংশ ভাল আছেন, তাঁরা দল ছাড়বেন। তবে তাঁর দল ছাড়ার পিছনে কাউকে দোষ দিতে চান না। নিজের মন্ত্রিত্ব ও দল ছাড়া নিয়ে মঞ্জুল বলেন, “আমার ভাল লাগেনি, তাই ছেড়ে এসেছি।”

স্বরূপনগরের মালঙ্গপাড়ায় গৌতম দেব।

মঞ্চে তখন প্রার্থী ও তাঁর বাবা বসে, তখনই বিজেপির গতবারের প্রার্থী কেডি বিশ্বাস জনতার উদ্দেশে বলেন, “জানি আপনাদের মধ্যে দুঃখ-যন্ত্রণা আছে। আমারও আছে। কিন্তু প্রার্থী যে-ই হোন না কেন, এখানে পদ্মফুল ফোটাতে হবে।”

প্রসঙ্গত, সুব্রতকে প্রার্থী হিসাবে শুরুর দিকে দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা অনেকেই মেনে নেননি। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের গাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ হয়েছে। রেল অবরোধও হয়েছে গাইঘাটায়। দলের সর্বভারতীয় নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ বনগাঁয় প্রচারে এসে সুব্রত ও কেডিকে দু’পাশে নিয়ে দলের ঐক্যের ছবিটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তারপরেও দলের অন্দরে ক্ষোভের সুর যে পুরোপুরি ধামাচাপা দেওয়া যায়নি, এ দিন কেডির বক্তব্যে সেই ইঙ্গিতই মিলেছে।”

সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী বরুণ বিশ্বাস খুন হয়ে গিয়েছেন। তাঁর দিদি প্রমিলা রায়কে এ দিন বিজেপির সভায় দেখা যায়। তাঁর হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দেন সুব্রত। তিনি বলেন, “আমি রাজনীতি বুঝি না। কিন্তু ভাইকে হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এখন প্রতিবাদীদের খুন করা হচ্ছে। মৃত্যু নিয়ে খেলা চলছে। আজও ভাইকে খুনের বিচার পেলাম না।” তাঁর দাবি, শাসক দলের নেতারা তাঁর বাড়িতে এসে চাকরি দিতে চেয়েছিলেন। যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। প্রমিলাদেবীর কথায়, “কোনও স্বার্থ না থাকলে কেন চাকরি দিতে চাইবে ওরা? এরা মানুষ মারবে। পরিবারকে ভয় দেখাবে। আবার চাকরিও দিতে চাইবে। তাই আপনাদের কাছে এসেছি।” বরুণের দিদির আরও দাবি, নদী সংস্কারের বহু কোটি টাকা শাসক দলের লোকজন আত্মসাত্‌ করতে চেয়েছিল। বরুণ তার প্রতিবাদ করায় খুন হতে হয়েছে। এই অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই বলে অবশ্য দাবি করেছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা।

এ দিন হটাগঞ্জ বাজারে কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে সভা করতে আসেন কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র, মানস ভুঁইয়া। বিজেপিকে অগ্নিপিন্ডের সাথে তুলনা করে মানসবাবু বলেন, “বিজেপি একটা অগ্নিপিণ্ড। হঠাত্‌ করে জলে উঠে ভারতবর্ষকে ছারকার করতে চাইছে।” এ দিন তৃণমূলেরও কড়া সমালোচনা করেছেন সভায় উপস্থিত কংগ্রেস নেতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE