Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

লেভেল ক্রসিং পেরোতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত ২

বেপরোয়া ভাবে লাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল মোটর ভ্যানের চালক ও এক মহিলা যাত্রীর। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ-নামখানা শাখার কুলপির সিংহেরহাট লেভেল ক্রসিংয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম বাবুল গাজি (২৩) ও মিনাক্ষী হালদার (৫০)। প্রথম জনের বাড়ি ওই এলাকায় রামেশ্বরপুর গ্রামে। অন্য জন মৌল্লে গ্রামের বাসিন্দা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৮
Share: Save:

বেপরোয়া ভাবে লাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল মোটর ভ্যানের চালক ও এক মহিলা যাত্রীর। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ-নামখানা শাখার কুলপির সিংহেরহাট লেভেল ক্রসিংয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম বাবুল গাজি (২৩) ও মিনাক্ষী হালদার (৫০)। প্রথম জনের বাড়ি ওই এলাকায় রামেশ্বরপুর গ্রামে। অন্য জন মৌল্লে গ্রামের বাসিন্দা।

রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেন আসছে দেখেই গাড়ির গতি বাড়িয়ে পার হচ্ছিলেন ভ্যান চালক বাবুল। অন্য একটি ভ্যানচালক তাঁকে ট্রেন আসছে বলে সাবধানও করেছিল। কিন্তু কোনও কথা গ্রাহ্য না করেই লাইন পেরোতে চেষ্টা করেন বাবুল। তখনই নামখানা থেকে শিয়ালদহগামী ট্রেনটি ভ্যানে ধাক্কা মারে। এই লেভেল ক্রসিংয়ে প্রতি দিন বহু মানুষ পারাপার করলেও কোনও গেটের ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। গভীর রাত পর্যন্ত যাতায়াত চললেও আলোরও কোনও ব্যবস্থা নেই। এ দিন দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আর এক ভ্যানচালক সুজয় হালদার বলেন, “দুপুর ২টো নাগাদ আমি ওই মোটরভ্যানের পিছনেই ছিলাম। বাবুল দু’জন যাত্রীকে নিয়ে যাচ্ছিল। ট্রেন আসছে দেখতে পেয়ে আমি চিত্‌কার করে বলি, ভ্যান দাঁড় করাতে। কিন্তু ও সে সব শোনেনি।” সুজয়বাবু জানান, বাবুলের মোটরভ্যানটি ট্রেনলাইনে ওঠা মাত্র শিয়ালদহগামী ট্রেনটি ধাক্কা মারে। লাইনের ডান দিকে প্রায় ৪০ ফুট দূরে বাবুল ও এক মহিলা যাত্রীর দেহ পড়ে ছিল। মোটর ভ্যানের আর এক মহিলা যাত্রী দুর্ঘটনার আগেই লাফ মেরে পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন সুজয়।

বছর তিনেক আগে রামেশ্বরপুর থেকে কুলপির ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের সিংহেরহাট মোড় পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার ঢালাই রাস্তা তৈরি হয়েছিল। ওই রাস্তাটি নামখানা শিয়ালদহ-শাখায় সিংহেরহাট লেভেল ক্রসিং সংযোগ। প্রতিনিয়ত ওই রাস্তা দিয়ে মোটর ভ্যান, সাইকেল ভ্যান ও ছোট বড় গাড়িতে করে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। রেনায়েতপুর, রাজারামগাট, বfক্স, চণ্ডীপুর, হাকিমপুর, উলুরদাঁড়-সহ ১৫-২০টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতও এই রাস্তা দিয়ে। এ ছাড়াও, যাতায়াত করে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। ওই লেভেল ক্রসিং থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে করজ্ঞলি স্টেশন। সেখান থেকে ট্রেন ধরতে অনেকেই এই লেভেল ক্রসিং পার হন। এর আগেও এখানে কয়েকটি গরু ট্রেনে কাটা পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। কয়েকটি গাড়িও দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই লেভেল ক্রসিংয়ে গেট বসানোর আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগকারী রবি মহাপাত্র বলেন, “ওটি লেভেল ক্রসিংই নয়। যাত্রীরা লেভেল ক্রসিং বানিয়ে নিয়েছেন। এটি আমরা ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু বলে মনে করছি।” তবে পূর্ব রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, রেললাইনের উপরে এ ভাবে পারাপার নিষিদ্ধ। এটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE