ফাইল চিত্র।
২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) প্যানেলের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৫২৬১টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাবও পেশ করেছে শিক্ষা দফতর। সেই সঙ্গে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের কথা মাথায় রেখে কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষার জন্য যথাক্রমে ৭৫০ ও ৮৫০টি মিলিয়ে অতিরিক্ত মোট ১৬০০ পদও তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। বৈঠকের পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দাবি, আগামী দিনে রাজ্যে বিভিন্ন চাকুরি প্রার্থীদের মেধা-যোগ্যতা এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের বক্তব্য, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্ত চলছে। এতে যথেষ্ট অস্বস্তিতে সরকার। তার উপর চাকরির দাবিতে চলতে থাকা দীর্ঘ আন্দোলনও অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। তাই ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় তৈরি প্যানেলের জন্যই ৫২৬১টি পদ সরকারকে সৃষ্টি করতে হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, সেই সময়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নানা সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
যদিও অতীতের সেই প্রসঙ্গে ঢুকতে চাননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘অতীতে কী হয়েছে, তা নিয়ে বলতে পারব না। আমি আজ মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। যে সময় আমি ছিলাম না, সেই সময় নিয়ে আমার কথা বলা অনধিকার চর্চা। তদন্ত তো হচ্ছে। আমার দফতরে কোনও ভুল থাকলে তা দেখার জন্য অন্য দফতর রয়েছে।’’ ব্রাত্যের সংযোজন, ‘‘সরকারের নিয়ম মেনে, আইনি পরামর্শ নিয়ে, অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে তাঁর মত নিয়ে এটা করা হয়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্যই এই পদক্ষেপ। কুৎসা-নিন্দা করার লোক থাকবে। সরকার তার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’
শিক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ৫২৬১টি পদ তৈরি হচ্ছে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের জন্য। তাতে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকদের সঙ্গে থাকবে গ্রুপ-সি, ডি-ও। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ওই প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ব্রাত্য বলেন, ‘‘২০১৬ সালে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও যাঁরা বঞ্চিত হয়েছিলেন, তাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী এই পদগুলি তৈরি করেছেন। পদগুলির মেয়াদ বাড়িয়ে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারীদের জন্য মেধার অপেক্ষমাণ তালিকার সুপারিশ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, যে ক্যানসার রোগী অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন, তাঁকেও নিয়োগের জন্য বিবেচনার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় দেওয়া হয়েছে।’’
শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, আন্দোলনরতদের সঙ্গে ইদের দিন কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের প্যানেলের মেয়াদও ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অতিরিক্ত পদ তৈরি হয়েছে। বয়সের কথা ভেবে তাঁদের যাতে মেধা তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা যায়, মুখ্যমন্ত্রী তার জন্য বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন।
এ দিন শিক্ষামন্ত্রীর এই ঘোষণার পরে কর্মশিক্ষা-শারীরশিক্ষার এক চাকরিপ্রার্থী তথা এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ কর্মশিক্ষা শরীর শিক্ষার প্রেসিডেন্ট রাজু দাস বলেন, “খুবই আনন্দের খবর। তবে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই ধর্না-অবস্থান থেকে উঠছি না।” নবম থেকে দ্বাদশের এক চাকরিপ্রার্থী চন্দন প্রধান বলেন, “আমরা যোগ্য থেকেও এত দিন বঞ্চিত ছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। তবে আমরাও নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত উঠব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy