২০১৬ সালের ভোটের পরেই নারদা অভিযুক্তদের প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সতর্ক করেছিলেন তিনি, রবিবার কুলতলির সভায় এমনটাই দাবি করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘২০১৬ সালে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। খবরের কাগজে ততটা হাইলাইট করা হয়নি। আমি বলেছিলাম, যারা পার্টির ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে, তাদের পিছনের সারিতে রাখা হোক। আমার কথায় যদি দল চলত! আমি যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছিলাম, তখন যদি তিনি বিচার করতেন। আজ তা হলে এদের জায়গা শ্রীঘরে হতো। বিজেপিতে নয়।’’
অভিষেক আরও বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদারতা। বদলা নয়, বদল চাই। তাই এদের মুখে এত বড় বড় কথা। আমি বলে যাচ্ছি, আগামী দিনে ক্ষমতায় এলে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বদলা হবে।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ বিধানসভা ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রকাশ্যে আসে নারদা স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো ফুটেজ। যেখানে দেখা যায় ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা একঝাঁক নেতাকে হাত পেতে টাকা নিতে। বর্ষীয়ান রাজনীতিক সুব্রত মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মন্ত্রিসভার সদস্য ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র, শুভেন্দু অধিকারীদের টাকা নিতে দেখা যায়। এছাড়াও তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দারের টাকা নেওয়ার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল। টাকা নিতে না দেখা গেলেও, ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছিল তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায় ও ছাত্রনেতা শঙ্কুদেব পন্ডাকেও। টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল পুলিশকর্তা এসএমএইচ মির্জাকেও। বর্তমানে মুকুল ও শঙ্কু বিজেপিতে। জেলবন্দি রয়েছেন পুলিশকর্তা মির্জা।
ঘটনাচক্রে ভোটের সময় সেই ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে এলে চাপ বেড়েছিল তৃণমূল নেতৃত্বের ওপরে। সে সময় মুখ্যমন্ত্রী বউবাজারের জনসভায় বলেছিলেন, ‘‘আগে জানা থাকলে ওঁদের টিকিট দিতাম না।’’ কিন্তু এমন চিত্র প্রকাশ্যে আসার পরেও ২১১টি আসনে জয়ী হয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা। সেই সময় মন্ত্রিসভা গঠন নিয়েই কথাবার্তা হয়েছিল মমতা-অভিষেকের। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে দলের ভাবমুর্তি স্বচ্ছ রাখতে নারদায় অভিযুক্তদের মন্ত্রিসভায় রাখার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিলেন বলে খবর। যদিও শোভন-শুভেন্দু-সুব্রত-ফিরহাদদের মন্ত্রিসভায় নেন মমতা। এই সিদ্ধান্তের জেরে শেষ পর্যন্ত শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আসেননি অভিষেক। এদিন সেই প্রসঙ্গই উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর সাংসদ ভাইপো।