Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নেপাল হয়ে দিল্লি যেতে পারেন গুরুঙ্গ

সাম্প্রতিক অতীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের পরামর্শ মেনে বন্‌ধ না তুললেও এ যাত্রায় সুযোগ পেলে পাহাড়কে স্বাভাবিক করার কথা ঘোষণা করতে পারেন মোর্চা সভাপতি। তা হলে পাহাড়ে কর্তৃত্বের বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত হবে।

উদ্ধার: লেবংয়ে মিলল বোমা তৈরির সামগ্রী। নিজস্ব চিত্র।

উদ্ধার: লেবংয়ে মিলল বোমা তৈরির সামগ্রী। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৯
Share: Save:

পাহাড়ের রাশ যে তাঁর হাতেই রয়েছে, সেটা বোঝাতে একযোগে নবান্ন ও নয়াদিল্লিতে যোগাযোগের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ।

দল সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই দিল্লিতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন গুরুঙ্গ। কিন্তু, পুলিশে যে ভাবে তাঁকে খুঁজছে, তাতে শিলিগুড়ি-বাগডোগরা হয়ে দিল্লি যাওয়াটা প্রায় অসম্ভব। তাই কোনও ভাবে প্রথমে নেপালে ঢুকে, পরে সেখান থেকে বিহার হয়ে দিল্লি যেতে পারেন মোর্চা সভাপতি— মোর্চার অন্দরে এই নিয়ে এখন জোর আলোচনা চলছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, যে হেতু ‘লুক আউট’ নোটিস জারি হয়েছে, তাই কাঠমান্ডু থেকে বিমানে দিল্লি যাওয়া মুশকিল গুরুঙ্গের পক্ষে। সে ক্ষেত্রে বিহারে গিয়ে ট্রেন কিংবা সড়ক পথে দিল্লি যেতে পারেন তিনি। এবং সেটা এই সপ্তাহের শেষ দিকে হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা।

মোর্চার অন্দরের খবর, যে হেতু মোর্চা এখনও এনডিএ-র শরিক, তাই দিল্লিতে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতেই পারেন গুরুঙ্গ। সাম্প্রতিক অতীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের পরামর্শ মেনে বন্‌ধ না তুললেও এ যাত্রায় সুযোগ পেলে পাহাড়কে স্বাভাবিক করার কথা ঘোষণা করতে পারেন মোর্চা সভাপতি। তা হলে পাহাড়ে কর্তৃত্বের বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত হবে।

আরও পড়ুন: মিছিলে অস্ত্র নয়, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

কিন্তু, ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত কারও সঙ্গে কেন্দ্রের কোনও মন্ত্রীর বৈঠক হলে তা নিয়ে প্রচুর বিতর্কেরও আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্য রাজনৈতিক ভাবেই আপাতত মামলার বেড়াজাল থেকে রেহাই পেরে মরিয়া হয়ে উঠেছেন গুরুঙ্গ। সেই সঙ্গে ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্তদের আগাম জামিনের জন্যও মোর্চার তরফে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মোর্চার এক প্রবীণ নেতা জানান, অতীতে ভাঙড়ে ইউএপিএ দিলেও তা উচ্চ আদালতে খারিজ হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও মোর্চা যে হেতু নিষিদ্ধ দল নয়, তা-ই রাষ্ট্রদ্রোহিতার ধারা প্রয়োগ করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত হয়েছে, তা নিয়ে উচ্চ আদালতে সওয়ালের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।

যা-ই হোক না কেন, গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠরা দ্রুত কিছু না কিছু পদক্ষেপ করতে চাইছেন। কারণ, তাঁদের মনে হচ্ছে, কিছু সময় হাতে পেলে বিনয় তামাঙ্গ পাহাড়বাসীর কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারেন। তিনি এর মধ্যেই সভার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেই সভা থেকে অনেক গোপন কথা ফাঁস করার দাবি করেছেন। একই সঙ্গে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যকে চিঠি দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতেও চেয়েছেন।

এ দিন মিরিকে দলীয় পতাকা ছাড়া মিছিল করে তৃণমূল। এর পরে অনীত থাপার সভা আছে কার্শিয়াঙে। তাতে যদি ভয় কাটিয়ে পাহাড়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করে, রাশ আলগা হয়ে যাবে গুরুঙ্গের। সে সব হওয়ার আগেই তাই পদক্ষেপ করতে চাইছেন তাঁরা।

কিন্তু গুরুঙ্গ কোথায়? তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপই বা কী হবে? এই দুই প্রশ্নের মধ্যে আপাতত পাক খাচ্ছেন আম-পাহাড়বাসী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE