মোড়গ্রাম থেকে হলদিয়া বন্দর পর্যন্ত রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণ করা এবং চারটি বাইপাস তৈরি করতে স্বল্পসুদে ঋণ দিতে রাজি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি)। কিন্তু জমি-জটে আটকে বছরখানেক ধরে কাজেই হাত দিতে পারেনি রাজ্য সরকার! অবশেষে ঠিক হয়েছে, রাস্তার দু’ধারে পূর্ত দফতরের যে সামান্য কিছু জমি রয়েছে — পুজোর পরে সেখানেই কাজ শুরু হবে। তবে পুরো প্রকল্পটি কবে দিনের আলো দেখবে, তা কেউ জানেই না।
নবান্নের খবর, এডিবি-র নিয়োগ করা মুম্বইয়ের একটি সংস্থা এবং রাজ্য হাইওয়ে কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়ারেরা যৌথ ভাবে প্রকল্পটি সমীক্ষা করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য ৪৮ একর এবং চারটি বাইপাস তৈরি করতে ৪২ একর জমি প্রয়োজন। সরকার ঠিক করেছে, বাজার দরেই সেই জমি কিনবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট চার জেলার জেলাশাসকের কাছে বার্তাও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু গত এক বছরে এক ছটাক জমিও কিনে উঠতে পারেনি কোনও জেলা প্রশাসন! এডিবি অবশ্য শর্ত দিয়েছে, কাজ শুরু না হলে ঋণের ৫০০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে না।
উত্তর- পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সঙ্গে হলদিয়া বন্দরের যোগাযোগের জন্য এখন একমাত্র রাস্তা হল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। সরকারের দাবি, মোড়গ্রাম থেকে হলদিয়া পর্যন্ত রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণ ও নতুন চারটি বাইপাস হলে জাতীয় সড়কের উপর চাপ অনেকটাই কমবে। মুর্শিদাবাদের মোড়গ্রাম থেকে বাদশাহী মোড়, মেছোগ্রাম, ঘাটাল, আরামবাগ, বর্ধমান হয়ে হলদিয়া বন্দর পর্যন্ত রাজ্য সড়কটি প্রায় ২৫০ কিলোমিটার লম্বা।
পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, এই রাস্তার ৫০ কিলোমিটার চার লেন এবং ২০০ কিলোমিটার দুই লেন করা হবে। পাশাপাশি, নাগর, বর্ধমান, ঘাটাল ও আরামবাগে চারটি বাইপাস হবে। তৈরি হবে একটি আরওবি এবং কয়েকটি উড়ালপুলও। জমি না মেলায় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সাত ভাগে রাস্তার কাজ হবে। এর মধ্যে মেছোগ্রাম থেকে ঘাটাল এবং ঘাটাল থেকে আরামবাগ অংশে কাজ শুরু হবে পুজোর পরে। কারণ, এই দু’টি অংশে পূর্ত দফতরের হাতে জমি রয়েছে। এখন রাস্তার দু’ধারের বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ, টেলিফোন লাইন, জলের লাইন সরানোর প্রস্তুতি চলছে।
প্রকল্পটি নিয়ে কী বলছেন জেলাশাসকেরা? পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমলের দাবি, ‘‘এই জেলায় জমি পেতে তেমন সমস্যা হবে না। কাজ শুরু করতেও আপাতত বাধা নেই।’’ হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশালের দাবিও প্রায় একই। বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘প্রকল্পটির ব্যাপারে বিশদে জানা নেই। খোঁজ নিতে হবে।’’ বর্ধমানের অংশে চাষিরা অবশ্য জানিয়েছেন, বাজারদরের থেকে বেশি অর্থ দিতে হবে। কারণ, অনেকের বাড়িঘর ভাঙা পড়বে। সরকার এতে রাজি থাকলে জমি দিতে আপত্তি নেই তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy