দুর্গাপুর জয়দেব অ্যাভিনিউয়ের মণ্ডপ। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।
জগদ্ধাত্রী পুজোর নাম শুনলেই এ রাজ্যের মানুষের মনে আগে আসে চন্দননগর ও কৃষ্ণনগরের নাম। কিন্তু বছর কয়েক ধরে দুর্গাপুর ও আসানসোল জুড়ে আড়ম্বরের সঙ্গে পূজিতা হচ্ছেন এই দেবী। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়।
দুর্গাপুরের কুমোর পাড়ায় খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, গত বছরের থেকে এ বছর জগদ্ধাত্রী প্রতিমার বায়না বেশি হয়েছে। দুর্গাপুরের গ্যামন ব্রিজ এলাকার ভূপেন দে ১৯৮২ সাল থেকে জগদ্ধাত্রী প্রতিমা তৈরি করছেন। তিনি বলেন, “প্রথম বার মাত্র একটি প্রতিমা তৈরি করেছিলাম। বেশ কয়েক বছর প্রতিমা তৈরি প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য অনেকগুলি বায়না আসছে। গত বছর তিনি ৫টি প্রতিমা তৈরি করেছিলেন। তবে এ বছর সেটি বেড়ে হয়েছে ৭টি। দুর্গাপুরের জেকে পাল লেনের মৃৎশিল্পী অরুণ পাল এ বার ৮টি প্রতিমা তৈরি করছেন। এ ছাড়াও এসবি মোড়ের শিল্পী নবকুমার দে, আর্টিয়াল রোডের শিল্পী কালাচাঁদ পালও এ বছর বেশ কয়েকটি জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা তৈরি করেছেন।
এ বার দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর পাশাপাশি জগদ্ধাত্রী পুজোতেও থিম পুজো শুরু করেছে দুর্গাপুরের বিভিন্ন পুজো কমিটি। দশ বছর ধরে জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করে আসছে জয়দেব অ্যাভিনিউয়ের জাগরণী ক্লাব। এ বার তাদের থিম কাল্পনিক মন্দির। থাকছে বাহারি আলো। নন-কোম্পানি জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির পুজো এ বার ৩ বছরে পা দিল। এই পুজো কমিটির সভাপতি জয় দত্ত জানান, কাল্পনিক মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে। থাকছে গ্রাম্য পরিবেশ। বাড়তি আকর্ষণ হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুধু দুর্গাপুর শহর নয়, দুর্গাপুরের বিভিন্ন এলাকাতেই জাঁকজমকের সঙ্গে জগদ্ধাত্রী পুজো করে থাকেন পুজো উদ্যোক্তারা। বুদবুদের অ্যামুনিশন রোডের বিবেকানন্দ ক্লাবের পুজো এ বছর ৩০ বছরে পড়ল। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে।
জগদ্ধাত্রী পুজোয় মেতে উঠেছে আসানসোল খনি ও শিল্পাঞ্চল। আসানসোলের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ধর্মপল্লি জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি স্থানীয় আমপুকুরের ধারে পুজো শুরু করেছিল ২০০৫ সালে। ২০০৯ সালে সেই পুজো সরিয়ে আনা হয় ধর্মপল্লি মাঠে। এ বছর পুজোর এক দিন আগে থেকেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। মাঝে এই পুজোয় রাজনৈতিক রং লাগে। পুজো বন্ধও হয়ে গিয়েছিল। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা আবার এক হয়ে এই পুজো শুরু করেছেন। পুজোর উদ্যোক্তারা জানান, এ বার ধর্মপল্লি, ধ্রুবডাঙা, রঘুনাথপল্লি ও নিউআপার চেলিডাঙা শিবমন্দিরের বাসিন্দারা সম্মিলিতভাবে এই পুজোর আয়োজন করেছেন। আসানসোল গৌরমণ্ডল রোড পুজো কমিটির পুজো শুরু হয়িছিল ১৯৯৫ সালে। এখানে বিসর্জনের সন্ধ্যায় বসে ভজনের আসর। রানিগঞ্জ বড়বাজার এবিসিডি ক্লাবের পুজো শুরু হয় ১৯৮৪ সালে। অন্ডালের উখড়া পুরনো-হাটতলায় পুজো এ বার ২৫ বছরে পড়ল। এখানে প্রতিমার পাশে সিংহ ছাড়াও একটি হাতির মুখ রাখা থাকে। জামুড়িয়ার নন্ডীগ্রামে চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে দু’টি পুজো হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৫০ বছর আগে তৎকালীন জমিদার বাড়ির সহয়তায় তাঁদের বাড়িতে এই দু’টি পুজো শুরু হয়েছিল। উত্তর আসানসোলে সেনর্যালে প্রগতি সঙ্ঘের পুজো ২০ বছরে পা দিল। পুজো উদ্যোক্তারা জানান, আজ, শনিবার থেকে শুরু হবে মেলা। চলবে ১২ দিন। প্রতি দিন থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আসানসোলের মহিশীলা কলোনীর বটতলায় সঞ্চয়িনী পাঠাগারের পাশের মাঠের পুজো অনেক পুরনো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy