Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

তারকা না থাকায় অনেকে হতাশ, কেউ দেখছেন লাভ

এক দিকে মুনমুন সেন। অন্য দিকে বাবুল সুপ্রিয়। খানিক দূরে আবার শতাব্দী রায়। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের আশপাশে নানা লোকসভা আসনগুলিতে রয়েছেন এমনই সব তারকা প্রার্থী। কিন্তু এই কেন্দ্রে নেই তথাকথিত কোনও তারকা প্রার্থী। নানা দলের যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁর হয় স্থানীয় কেউ, অথবা জেলার সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৪ ০০:৫৫
Share: Save:

এক দিকে মুনমুন সেন। অন্য দিকে বাবুল সুপ্রিয়। খানিক দূরে আবার শতাব্দী রায়।

বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের আশপাশে নানা লোকসভা আসনগুলিতে রয়েছেন এমনই সব তারকা প্রার্থী। কিন্তু এই কেন্দ্রে নেই তথাকথিত কোনও তারকা প্রার্থী। নানা দলের যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁর হয় স্থানীয় কেউ, অথবা জেলার সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে। কোনও তারকা প্রার্থী না থাকা নিয়ে অবশ্য নানা মত ভোটারদের। অনেকে বলছেন, এই ধরনের প্রার্থী থাকার জন্য অন্য কেন্দ্রগুলির দিকে রাজ্যবাসীর নজর থাকবে বেশি। একাংশের আবার বক্তব্য, প্রার্থী তারকা কি না, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। প্রয়োজন কাজের মানুষের।

দুর্গাপুর থেকে দামোদর পেরোলেই বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র। সেখানে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী মুনমুন সেন। দুর্গাপুর শহর ছেড়ে আসানসোলের দিকে গেলে সেই আসনে বিজেপি-র প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। বর্ধমান লাগোয়া জেলা বীরভূমে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন শতাব্দী রায়, বিজেপি-র জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে সিপিএম এ বারও প্রার্থী করেছে গত বারের জয়ী সাইদুল হককে। তিনি বর্ধমান রাজ কলেজের শিক্ষক। তৃণমূলের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন স্পিকার মনসুর হবিবুল্লাহের মেয়ে, পেশায় চিকিৎসক মমতাজ সঙ্ঘমিতা। বিজেপি-র প্রার্থী দলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক তথা এই জেলার পর্যবেক্ষক দেবশ্রী চৌধুরী। কংগ্রেস এখনও এই কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত, এই কেন্দ্রে কোনও তারকাকে প্রার্থী করার ভাবনা এখনও নেই।

দুর্গাপুরের বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক অনিন্দ্য বসুর কথায়, “তারকা প্রার্থী থাকা না থাকা এমনিতে তেমন কোনও বিষয় নয়। তবু প্রার্থী হলে তারকাদের সামনে পান মানুষেরা। তাঁর প্রচারের সুবাদে এলাকার নাম বারবার সামনে আসে।” দুর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া মুনমুন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “যুব সমাজের কাছে তারকা প্রার্থীর অন্য রকম আকর্ষণ থাকে, সে তিনি যে দলের হয়েই দাঁড়ান না কেন। তাঁকে কাছ থেকে দেখার বাড়তি আগ্রহ থাকবেই। আমাদের কেন্দ্রে অবশ্য এ বার তেমন সুযোগ নেই।”

ভোটারদের একাংশের সুর খানিকটা আলাদা। এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী, এমএএমসি এলাকার বাসিন্দা সোনালি ভট্টাচার্যের দাবি, “মানুষের সঙ্গে যাঁদের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে, তাঁদেরই প্রার্থী করা উচিত। তারকা প্রার্থীরা জিতলেও পরে নিজের কাজের জগৎ নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়বেন, এই সম্ভাবনা থেকে যায়। সাধারণ মানুষ জনপ্রতিনিধিকে প্রয়োজনে পাশে না পেলে কি লাভ?” এক বহুজাতিক সংস্থার কর্মী সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমাদের এখানে প্রার্থীকে নিয়ে সকলে ব্যস্ত থাকবেন না, প্রার্থী ভোটারদের নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন।”

তবে তারকা প্রার্থী মানেই তিনি মানুষের কথা ভাববেন না বা জেতার পরে এলাকায় আসবেন না, এ কথা মনে করেন না অনেকেই। মিশ্র ইস্পাত কারখানার প্রাক্তন কর্মী, ইস্পাত নগরীর বি-জোনের তিলক রোডের বাসিন্দা রণজিৎ গুহ যেমন বলছেন, “তারকা প্রার্থী তারকা সুলভ খোলস থেকে বেরিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকলে অসুবিধা কোথায়। মানুষের কথা সংসদে বললেই চলবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE