Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

সংস্কার নেই পুকুর-নর্দমা, মশায় অতিষ্ঠ শহরবাসী

মশার জ্বালায় ঘুম উড়তে বসেছে দুর্গাপুর পুরসভার বাসিন্দাদের। অভিযোগ, বারবার জানানো সত্ত্বেও মশার উপদ্রব কমানোর জন্য নজর দিচ্ছে না পুরসভার কর্তারা। দুর্গাপুর পুরসভার মধ্যে রয়েছে মোট ৪৩টি ওয়ার্ড। এর মধ্যে সিটি সেন্টার, বিধাননগরের মতো অভিজাত এলাকা যেমন রয়েছে, তেমনই আছে রঘুনাথপুর, রাতুড়িয়া, অঙ্গদপুরের মতো গ্রাম। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক বছর আগেও দুর্গাপুর শহরে মশার উপদ্রব তেমন বেশি ছিল না।

আদালত চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।

আদালত চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫০
Share: Save:

মশার জ্বালায় ঘুম উড়তে বসেছে দুর্গাপুর পুরসভার বাসিন্দাদের। অভিযোগ, বারবার জানানো সত্ত্বেও মশার উপদ্রব কমানোর জন্য নজর দিচ্ছে না পুরসভার কর্তারা।

দুর্গাপুর পুরসভার মধ্যে রয়েছে মোট ৪৩টি ওয়ার্ড। এর মধ্যে সিটি সেন্টার, বিধাননগরের মতো অভিজাত এলাকা যেমন রয়েছে, তেমনই আছে রঘুনাথপুর, রাতুড়িয়া, অঙ্গদপুরের মতো গ্রাম। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক বছর আগেও দুর্গাপুর শহরে মশার উপদ্রব তেমন বেশি ছিল না। কিন্তু শহর আড়েবহরে বাড়তে শুরু করার পরেই পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে মশা। মূলত অপরিষ্কার নালা ও আবর্জনাই দুর্গাপুরে মশার আঁতুড়ঘর বলে পরিচিত। মশার হাত থেকে বাঁচতে অনেক বাড়ির জানলাতেই লাগানো রয়েছে জাল। তবে তাতেও অবশ্য রেহাই মেলা ভার। গত বছরই শহরে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গির সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল। তখনই মশার উপদ্রব কমাতে ওষুধ স্প্রে করা করার দাবি তুলেছিলেন নাগরিকরা। অভিযোগ, বছর ঘুরতে চললেও কাজের কাজ আদপে কিছুই হয়নি।

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ওর্য়াডেই জমে রয়েছে আবর্জনা। সংস্কারের অভাবে মজে গিয়েছে বিভিন্ন পুকুর ও নালা। দুর্গাপুরের রঘুনাথপুর এলাকার বাসিন্দা সুমন রায়ের দাবি, “মশার কারণে অন্ধকার নামার পরে খোলা জায়গায় বসে থাকাই দায়। বাড়িতেও মশা মারার ওষুধ ব্যবহার করতে হয়।” জাপানি এনসেফ্যালাইটিস ও এনসেফ্যালাইটিস জাতীয় উপসর্গ রোগ শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, দক্ষিণবঙ্গের কিছু এলাকাতেও ধরা পড়েছে। একই সঙ্গে রয়েছে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গির মতো রোগ। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, মশার উপদ্রব কমানোর জন্য যদি এখনই সতর্ক না হওয়া যায় তাহলে এই রোগ হানা দিতে পারে দুর্গাপুরেও। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের জন্য আলাদা ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক জনের রক্তে মিলেছে ম্যালেরিয়ার জীবানু। সিটি সেন্টার এলাকার বাসিন্দা সমীর সাহার অভিযোগ, “এনসেফ্যালাইটিস, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির মত রোগ ছড়ানোর অন্যতম মাধ্যম হল মশা। কিন্তু তার পরেও শহরের মশা মারার কোনও উদ্যোগই চোখে পড়ছে না।” তাঁর দাবি, খোলা নর্দমায় পুরসভার উদ্যোগে গাপ্পি মাছ ছাড়া উচিত। কারণ এই মাছ মশার ডিম খেয়ে নেয়। আবর্জনা পরিষ্কার করে ও জঙ্গল কেটে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করার দাবিও করেছে দুর্গাপুর পুরসভার বাসিন্দারা।

দুর্গাপুর পুরসভা অবশ্য কতর্ব্যে গাফিলতির অভিযোগ অবশ্য মানেনি। পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বৃষ্টির কারণে কাজে ব্যাঘাত ঘটলেও পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। মশা মারতে রাসায়নিক ওষুধও প্রয়োগ করা হবে।” প্রয়োজনে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানান তিনি। শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “মশা নিধনে আমরা নানা কর্মসূচি নিয়ে থাকি। বেসরকারি হাসাপাতালগুলোর কাছে আমাদের আর্জি, রক্ত পরীক্ষার পরিষেবা সুলভে দেওয়ার বিষয়টি যেন তাঁরা বিবেচনা করেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

durgapur municipality mosquito problem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE