মাধ্যমিক পাশ করার পরেই মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার প্রবণতা থাকে বেশি। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ নেই। আবার, এলাকার স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ থাকলেও অনেক অভিভাবক ভাল টিউশন পাওয়ার আশায় ছেলেমেয়েকে শহরের স্কুলে ভর্তি করতে চান। এর ফলে, উচ্চ মাধ্যমিকে শহরের স্কুলগুলির বিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়ার চাপ পড়ছে। এমনই দাবি নানা স্কুল কর্তৃপক্ষের।
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর মহকুমায় ৬৩টি স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকের পঠন-পাঠন চালু রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টিতে বিজ্ঞান বিভাগ আছে। দেখা গিয়েছে, শহরের প্রায় সব স্কুলেই বিজ্ঞান পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ, পাশেই গ্রামীণ এলাকা কাঁকসা ব্লকের ছবিটা একেবারেই অন্য। এই ব্লকে ১৬টি স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ানো হয়। তার মধ্যে মাত্র চারটিতে বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ রয়েছে। ফলে, বিপাকে পড়তে হয় আদিবাসী অধ্যুষিত এই ব্লকের পড়ুয়াদের। তাদের বক্তব্য, এমনিতেই বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার খরচ বেশি। তার উপরে শহরের স্কুলে পড়াশোনা করতে গেলে হয় গ্রাম থেকে নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়, অথবা সেখানে হস্টেল বা ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়। এর সঙ্গে রয়েছে বিজ্ঞানের সব বিষয়ে আলাদা টিউশন নেওয়ার ব্যাপার। সব মিলিয়ে পুরোটাই যথেষ্ট খরচসাপেক্ষ। দামোদরের চরের লালবাবা মানা এলাকার পড়ুয়া বিবেকানন্দ নুনিয়া বর্তমানে গলসি কলেজের কলা বিভাগের পড়ুয়া। তিনি বলেন, “ইচ্ছে ছিল বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার। কিন্তু, আমাদের সিলামপুর হাইস্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ নেই। তাই পড়া হয়নি।”
খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, কাঁকসা হাইস্কুলে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছে ৫৯ জন। গত বছর ছিল ৬৪ জন। তার আগের বছর ছিল ৯৪ জন। কাঁকসা হিন্দি হাইস্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ চালু হয় গত বছর। মাত্র ২ জন পড়ুয়া প্রথম বছর বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ১৬ জন। অথচ আসন রয়েছে ৩০টি। গোপালপুর হাইস্কুলে এ বছর ১৯ জন ভর্তি হয়েছে বিজ্ঞান বিভাগে। গত বছর ছিল ২৫ জন। তার আগের বছর এই বিভাগে পড়ুয়া ছিল ১৫ জন। প্রধান শিক্ষক অতুলকুমার মজুমদার বলেন, “আসন সংখ্যা বলে তেমন কিছু নেই আমাদের স্কুলে। গ্রামীণ এলাকায় পড়ুয়া কম। তবে পরিকাঠামো রয়েছে। কেউ এলে ফিরে যেতে হবে না।”