শহরবাসী ও বাস মালিকদের আপত্তি উড়িয়ে শেষ পযর্ন্ত বর্ধমান শহরে যাত্রীবাহী বাস ঢোকা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “শহরকে যানজটমুক্ত করতে প্রায় আট বছর আগে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমরা সেটাকেই বাস্তবায়িত করছি। আশা করি মানুষ আমাদের পক্ষে থাকবেন।”
এর আগে জেলা বাসমালিক সমিতি ওই সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে ১১ তারিখে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল যে শহরে বাস ঢোকা বন্ধ হলে, তারা রাস্তা থেকে বাসই তুলে নেবেন। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকের পরে ওই সমিতির সম্পাদক তুষার ঘোষ বলেন, “প্রশাসনের অনুরোধে ১৫ তারিখ থেকে বাস তুলে নিচ্ছি না। তবে মনে হয়, খরচ সামলাতে না পেরে বাস রাস্তাতেই ফেলে রেখে বাড়ি চলে যেতে হবে আমাদের।” তবে জেলা পরিবহন আধিকারিক প্রদীপ মজুমদার বলেন, “আপাতত এই সিদ্ধান্তের আয়ু একমাস। একটি মনিটরিং কমিটি তৈরি করা হয়েছে। মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে।”
বর্ধমান শহরের দু’দিকে দুটি নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরি হয়েছে দীর্ঘদিন আগেই। তবে কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সে দুটি। বছরখানেক আগে ওই স্ট্যান্ডদু’টিকে কাজে লাগাতে প্রশাসনের তরফে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, শহরের ভেতরে কোনও বাস ঢুকতে দেওয়া হবে না। কিন্তু বাসমালিকদের আপত্তি এবং পুরবাসীর অসুবিধার কথা ভেবে শেষ পযর্ন্ত প্রশাসন ওই সিদ্ধান্ত কিছু দিনের জন্য স্থগিত রাখে। তবে এ বার ঠিক হয়েছে, ১৫ জুন থেকে শহরের ভেতরে আর বাস ঢুকতে দেওয়া হবে না। সিদ্ধান্তের কথা শুনে পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “মানুষের অসুবিধা হয় এমন কোনও কাজ করা হবে না। বাসস্ট্যান্ডে নামা যাত্রীদের শহরের নানা প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার বিকল্প ব্যবস্থা না করে শহরে বাস না ঢুকতে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।” এ দিনই কলকাতার ট্রাম কোম্পানির অফিসে পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলার আরেক মন্ত্রী তথা বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “শহরে বাস ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন পরিবহন মন্ত্রী। আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”