Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশ্যে জুয়ার ঠেক, প্রতিবাদে মার প্রৌঢ়কে

বাবা-ছেলের চিৎকার শুনে পড়শিরা বেরিয়ে আসেন। তাঁদের প্রতিবাদের মুখে চম্পট দেয় জনা সাতেক দুষ্কৃতী। এলাকাবাসীই প্রহৃত বাবা, ছেলেকে আসানসোল হাসপাতালে ভর্তি করান।

প্রহৃত প্রতিবাদী সুনীল বাউরি। নিজস্ব চিত্র

প্রহৃত প্রতিবাদী সুনীল বাউরি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০৭
Share: Save:

বাড়ির সামনে রাস্তায় বসেছিল জুয়ার ঠেক। প্রতিবাদ করায় প্রৌঢ়ের মুখে মদের বোতল ভেঙে আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। বাবাকে বাঁচাতে গেলে মারধর করা হয় প্রৌঢ়ের ছেলেকেও। এর পরেই রুখে দাঁড়ান এলাকাবাসী। তাঁদের মারমুখী মেজাজ দেখে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার রাতে পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির নিয়ামতপুরের ঘটনা। দুষ্কৃতীদের
গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার অবরোধও হয় এলাকাতে।

নিয়ামতপুরের সায়ারপাড়ার বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব সুনীল বাউড়ি মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ কাজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এলাকাবাসীরা জানান, সেই সময়ে বাড়ির অদূরে প্রকাশ্যে জুয়ার ঠেক চলতে দেখে প্রতিবাদ করেন পেশায় দিনমজুর সুনীলবাবু। অভিযোগ, সেই রাগে দুষ্কৃতীরা সুনীলবাবুর মুখে আঘাত করে। বোতল ভাঙা কাচে লেগে বাঁ দিকের চোয়ালে অনেকটা কেটে যায় সুনীলবাবুর। তাঁর চিৎকারে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁর ছেলে তাপস। অভিযোগ, তাঁকেও মারধর করা হয়।

বাবা-ছেলের চিৎকার শুনে পড়শিরা বেরিয়ে আসেন। তাঁদের প্রতিবাদের মুখে চম্পট দেয় জনা সাতেক দুষ্কৃতী। এলাকাবাসীই প্রহৃত বাবা, ছেলেকে আসানসোল হাসপাতালে ভর্তি করান। তাপসকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। সুনীলবাবু চিকিৎসাধীন। ওই রাতে হিরাপুরের নয়াবস্তি লাইনপারেও জুয়ার ঠেকে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। মারামারির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কালীপুজোর ঠিক আগে আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা জুয়ার ঠেকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সায়ারপাড়া-সহ শিল্পাঞ্চলের একাধিক এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ,
কাজের কাজ প্রায় কিছুই হয়নি। তাপসবাবুর ক্ষোভ, ‘‘প্রায়ই যেখানেসেখানে জুয়ার ঠেক বসছে!’’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসীর বক্তব্য, ‘‘জুয়ার ঠেকে নানা রকম বাজে লোক আসে। ওরা নানা রকম গণ্ডগোল বাধায়। ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়াতেই রুখে দাঁড়িয়েছি।’’ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে ও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে এ দিন বেলা ১১টা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ লিথুরিয়া রোড অবরোধ করেন। তাঁদের ক্ষোভ, দুষ্কৃতীরা এলাকায় ‘চেনা মুখ’, তবু পুলিশ তাদের ধরে না। তবে পুলিশের দাবি, এফআইআরে নির্দিষ্ট কারও নাম নেই।

পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘জুয়ার ঠেকগুলি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gambling Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE