Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মনোনয়ন তুলে আবির খেলা বিজেপি প্রার্থীর

বিরোধীদের দাবি, শাসকদলের হুমকি ও সন্ত্রাসের কারণেই তাদের দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

মনোনয়ন প্রত্যাহার করে বিরোধীরা তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আবির খেলাতে মেতে ওঠেন।

মনোনয়ন প্রত্যাহার করে বিরোধীরা তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আবির খেলাতে মেতে ওঠেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও কালনা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ১২:১৩
Share: Save:

মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ভোটের লড়াই ছাড়লেন পরের পর বিরোধী দলের প্রার্থীরা। এর কারণ হিসাবে কেউ নিজের শারীরিক সমস্যাকে দায়ী করলেন। কেউ জানালেন পারিবারিক অসুবিধার কথা। কেউ আবার প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করে এ দিন শাসকদলের সঙ্গেই আবির খেলায় মেতে ওঠেন। বিরোধীদের যদিও দাবি, শাসকদলের হুমকি ও সন্ত্রাসের কারণেই তাদের দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

জেলা তৃণমূলের নেতা উত্তম সেনগুপ্ত অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘ওই প্রার্থীরা নিদেরাই প্রশাসনের কাছে এসে সমস্যা জানিয়ে ভোটের লড়াই থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। আর বিরোধী নেতারা ঘরে বসে সন্ত্রাসের বুলি আওড়াচ্ছেন। মানুষ আসল সত্য বুঝতে পারছেন।’’ শনিবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এ দিন সকাল থেকেই জমজমাট নাটক খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূলের কার্যালয়ে। খণ্ডঘোষ ব্লকের শশঙ্গা অঞ্চলের তিন নম্বর সংসদের বিজেপি প্রার্থী নিখিল ঘোষ তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে এ দিনই তৃণমূলে যোগ দেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তিনি আবির খেলাতেও মেতে ওঠেন। নিখিলবাবুর দাবি, প্রথম থেকেই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু পারিবারিক কারণ এবং কিছু ভুল বোঝাবুঝির জন্য তিনি বিজেপি-র হয়ে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। পরে নিজের ভুল বুঝতে পরে ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম এবং বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের হাত ধরে পুনরায় তৃণমূলে ফিরলেন।

খণ্ডঘোষেই বিজেপি-র জেলা পরিষদ প্রার্থী শম্পা মাথুর এ দিন তাঁর প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তিনি জানান, কিছু পারিবারিক সমস্যা থাকায় তিনি ভোটে লড়াই করবেন না। একই ছবি রায়নায়। সেখানে পহলানপুরের ৮ নম্বর আসনের সিপিএমের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী অজয় কুমার সিংহ এ দিন বিডিও সৌমেন কোনারকে জানান, তিনি শারীরিক কারণে মনোনয়ন প্রত্যাহার করছেন। ২০০৮ সালে তিনি সিপিএমের টিকিটে ভোটে জিতে সদস্য নির্বাচিত হন। গলসি ২ ব্লকে আবার গত তিন দিনে গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪৩ এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে ১৩ জন বিরোধী প্রার্থী তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর।

বর্ধমানের দুই মহকুমার পাশাপাশি কালনাতেও শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিরোধীরা। তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে কালনা ১ ব্লকে তাদের বহু প্রার্থীকে বাড়ি ছেড়ে নানা জায়গায় পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে— এই মর্মে রাজ্য নির্বাচনকে চিঠি পাঠিয়েছে বিজেপি। দলের জেলা সম্পাদক ধনঞ্জয় হালদার শুক্রবার পাঠানো চিঠিতে দাবি করেছেন, সব থেকে বেশি সন্ত্রাস চালানো হয়েছে সুলতানপুর ও নান্দাই পঞ্চায়েত এলাকায়। ধনঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘শুধু নির্বাচন কমিশনই নয়। মহকুমাশাসক, বিডিওকে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।’’ মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিন সিংহানিয়া বলেন অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নান্দাইয়ের তৃণমূল নেতা রাজকুমার পাণ্ডে অবশ্য দাবি করছেন, ‘‘সন্ত্রাসের অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওদের সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষমতা নেই। আমরা তো আর ওদের হয়ে প্রার্থী দিয়ে দেব না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE