অবসরের প্রায় ছ’মাস আগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা পদের অধিকর্তার পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য উপচার্যের কাছে চিঠি দিয়েছেন রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা। প্রায় সাড়ে চার বছরের বেশি সময় ধরে এই অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন তিনি। শুধু ওই দূরশিক্ষা দফতর থেকে নয়, ‘লাইফ লং লার্নিং’ বিভাগের কর্তার পদ থেকেও সরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন দেবকুমারবাবু। অবসরের আগে এ ভাবে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের কর্তা থেকে অব্যাহতি চাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সূত্রের দাবি, আগের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারের আমলে দেবকুমারবাবুর আলাদা ‘গুরুত্ব’ ছিল। তাঁর আমলেই দেবকুমারবাবু কলেজসমূহের পরিদর্শক (আইসি) থেকে রেজিস্ট্রার পদে যোগ দেন। আইসি থাকাকালীন ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দূরশিক্ষা পদের অধিকর্তা পদে যোগ দেন। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য নিমাই সাহার আমলে তাঁর সঙ্গে কর্তৃপক্ষের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। অভিযোগ, তাঁর পাঠানো বিভিন্ন ‘নোট’ খতিয়ে দেখার জন্য অধঃস্তন আধিকারিদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা বারবার রেজিস্ট্রার দফতর থেকে বিভিন্ন ফাইল চেয়ে পাঠাচ্ছেন। তাতে রেজিস্ট্রার পদের অমর্যাদা হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ।
এ ছাড়াও দূরশিক্ষা দফতরের ‘স্টাডি মেটেরিয়াল’ দরপত্র ডাকার পরে ‘পারচেজ কমিটি’ অনুমতি দিচ্ছে। তার পরেও তা খতিয়ে দেখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নতুন করে কমিটি গঠন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়কে হাতের তালুর মতো চেনা এক আধিকারিককে শেষ সময়ে এসে অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। সে জন্যই তিনি পদ থেকে অব্যাহতি চাইছেন।’’ দেবকুমারবাবু দায়িত্ব নেওয়ার পরে দূরশিক্ষা বিভাগে বন্ধ হয়ে যাওয়া এমবিএ কোর্স চালু করেছেন। এ ছাড়া বিএড-ও চালু করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের দাবি, পাঁচ শীর্ষ আধিকারিকের নিয়োগ নিয়ে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল, তখন থেকেই উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের মধ্যে ‘দূরত্ব’ শুরু হয়। ওই পাঁচ জনের বিরুদ্ধে দূরশিক্ষা দফতরের দু’জন সহ-অধিকর্তার বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনেন তদন্তকারী অফিসার। ওই শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘উপাচার্য রেজিস্ট্রারের মধ্যে প্রকাশ্যে কোনও সমস্যা না থাকলেও তাঁদের মধ্যে সামান্য দূরত্ব রয়েছেই।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, পুজোর ছুটির আগে ২২ সেপ্টেম্বর ওই চিঠি দেন দেবকুমারবাবু। তার পরে উপাচার্যের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তন্ময় দাশগুপ্তকে দূরশিক্ষা দফতরে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক কাজও বুঝিয়ে দিয়েছেন। দেবকুমারবাবু বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে মুখ খুলব না।’’ উপাচার্য বলেন, ‘‘আর কয়েক মাস পরেই দেবকুমারবাবু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেবেন। গুরুত্বপূর্ণ ওই বিভাগে দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য তিনি চিঠি দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy