Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্যুৎ চুরি রুখতে তারের বদলে কেবল

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬-র মার্চে এই ব্লকে লোকসানের মাত্রা ছিল ৮৪.৩৬ শতাংশ। ২০১৭ সালের মার্চে তা কমে হয় ৭৭.৯৭ শতাংশ। এ বার লোকসানের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫.৫৩ শতাংশে নামিয়ে আনতে চাইছেন কর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০২:০৯
Share: Save:

একসময় বিদ্যুৎ পরিষেবায় লোকসানে মন্তেশ্বর ব্লক ছিল রাজ্যে সবার উপরে। বছর খানেকের চেষ্টায় লোকসানের বহর কিছুটা কমলেও ঠেকানো যায়নি বিদ্যুৎ চুরি। দফতরের কর্তাদের দাবি, সমস্যা মেটাতে লাগাতার অভিযানের পাশাপাশি ৫৭ কিলোমিটার ওভারহেড তার খুলে কেবল লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘যাঁরা বাড়ি বাড়ি মিটার রিড করেন তাঁদের উপরেও নজরদারি চালানো হবে।’’

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬-র মার্চে এই ব্লকে লোকসানের মাত্রা ছিল ৮৪.৩৬ শতাংশ। ২০১৭ সালের মার্চে তা কমে হয় ৭৭.৯৭ শতাংশ। এ বার লোকসানের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫.৫৩ শতাংশে নামিয়ে আনতে চাইছেন কর্তারা। দফতরের হিসেবে বছরে এই ব্লককে প্রায় ৯ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। কিন্তু মাত্র ৩ কোটি ৩০ লক্ষ ইউনিটের টাকা মেলে। এর মূল কারণই চুরি। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকে বিদ্যুৎ চুরি বেশি হয় কৃষি ক্ষেত্রে। মিটার ছাড়াই তার টেনে নিয়ে যাওয়া হয় অগভীর নলকূপে। এ ছাড়াও বছরের পর বছর ধরে হুকিং করে আলো, পাখা চালান বহু গ্রামবাসী। অনেকে মিটারেও কারচুপিও করেন। সম্প্রতি একটি বাড়িতে বিদ্যুতের চুরি করা তার কংক্রিটের দেওয়ালের ভিতর দিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রমাণও পেয়েছেন কর্তারা।

সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়। ছিলেন মহকুমাশাসক, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিদ্যুৎ দফতরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়র। বৈঠকে ব্যপক বিদ্যুৎ চুরি হয় এমন ২৯টি গ্রামকে বেছে নেওয়া হয়। ঠিক হয়, এই সমস্ত গ্রামে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি সংযোগ দেবেন। মাস খানেকের মধ্যে তিন থেকে চার হাজার নতুন সংযোগ দেওয়া হবে। এ ছাড়াও শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত বিদ্যুৎ চুরি রোধে চালানো হবে লাগাতার মাইক প্রচার। কর্তাদের দাবি, বহু ক্ষেত্রে দেখা যায় সংযোগ দেওয়ার পরেও হুকিং চলে। তা রুখতে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে।

বিদ্যুৎ পরিষেবা নিয়ে পাল্টা অভিযোগ রয়েছে বাসিন্দাদেরও। তাঁদের ক্ষোভ, গরমে পর্যাপ্ত ভোল্টেজ থাকে না। চাষের জল তুলতেও সমস্যা হয়। তার সঙ্গে টানা লোডশেডিংও চলে। বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, সমস্যা সমাধানে পুড়শুরি এবং মণ্ডলগ্রামে দুটি সাবষ্টেশন গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। বাড়িতে এবং কৃষি ক্ষেত্রে পৃথক সংযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কালনা শাখার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার কৌশিক মণ্ডল বলেন, ‘‘নতুন পদক্ষেপে লোকসান কমবে। পরিষেবাও উন্নত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cables Hooking মন্তেশ্বর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE