Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ট্রাকের দাপটে চলতে আতঙ্ক জাতীয় সড়কে

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মাড়ো মোড়ের ঘটনায় স্কুটি চালক ঠিক ভাবেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু ট্রাকটি বেপরোয়া গতিতে একটি গাড়িকে পাশ কাটিয়ে যেতে গিয়ে ওই স্কুটির পিছনে ধাক্কা দেয়।

রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ট্রাক। নিজস্ব চিত্র

রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ট্রাক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪৫
Share: Save:

অন্ধকার নামলেই রাস্তা যেন দখলে। কোথাও ইচ্ছেমতো দাঁড় করিয়ে রাখা, কখনও বেপরোয়া যাতায়াত— জাতীয় সড়কে ট্রাকের দৌরাত্ম্যে বাড়ছে দুর্ঘটনা।

শনিবার রাতেই ট্রাকের ধাক্কায় দু’টি দুর্ঘটনায় তিন জন প্রাণ হারিয়েছেন বুদবুদে। এলাকাবাসীর দাবি, বেপরোয়া গতির জেরেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। মালবোঝাই ট্রাক-লরির এমন দৌরাত্ম্যের জেরে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে বলে তাঁদের অভিযোগ। পুলিশ জানায়, ট্রাক-সহ সব রকম যানবাহনের গতিবেগে লাগাম পরাতে নজরদারি চলছে।

২ নম্বর জাতীয় সড়কের আশপাশের এলাকার বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের দাবি, সন্ধের পরেই জাতীয় সড়কে ট্রাকের সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েক গুন। বালি, পাথর বোঝাই ট্রাকের দ্রুত যাতায়াতে সমস্যায় পড়েন মোটরবাইক আরোহী থেকে নানা ছোট গাড়ির চালকেরা। শনিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ স্কুটিতে চড়ে জাতীয় সড়ক ধরে যাচ্ছিলেন বুদবুদের বাসিন্দা লাদু ওরাও। সঙ্গে ছিলেন তাঁর শ্যালিকা মঞ্জু তামাঙ্গ। জাতীয় সড়কের মাড়ো মোড়ের কাছে একটি ট্রাক তাঁদের ধাক্কা মেরে পালায়। মৃত্যু হয়েছে দু’জনেরই। ওই রাতেই বুদবুদের তিলডাঙা মোড়ে লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মাড়ো মোড়ের ঘটনায় স্কুটি চালক ঠিক ভাবেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু ট্রাকটি বেপরোয়া গতিতে একটি গাড়িকে পাশ কাটিয়ে যেতে গিয়ে ওই স্কুটির পিছনে ধাক্কা দেয়। তিলডাঙা মোড়টি আবার বরাবরই দুর্ঘটনাপ্রবণ। আগেও এখানে নানা দুর্ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন থাকলেও রাতে এখানে কাউকে দেখা যায় না। তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।

শুধু বেপরোয়া গতি নয়, রাস্তার পাশে রাতে অনেক সময়েই সার দিয়ে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। নিত্যযাত্রীরা জানান, জাতীয় সড়কে ট্রাক দাঁড়ানোর বেশ কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। কিন্তু রাতে হোটেলে খাওয়াদাওয়া বা বিশ্রামের জন্য রাস্তার পাশেই ট্রাক রেখে দেন চালক-খালাসিরা। তাতে অন্ধকারে সমস্যায় পড়েন গাড়ি-মোটরবাইকের চালকেরা। মাঝে-মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। কাঁকসার বাসিন্দা পার্থ বিশ্বাস জানান, মাস ছয়েক আগে বর্ধমান থেকে মোটরবাইকে ফেরার সময়ে বুদবুদের সাধুনগরের কাছে এমনই একটি ট্রাকে ধাক্কা মেরে পা ভাঙে তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘ট্রাকটির পিছনে কোনও আলো জ্বলছিল না। কাছাকাছি অন্য কোনও আলো ছিল না। অন্য একটি ট্রাক পাশ দিয়ে যাওয়ায় আমি বাঁ দিকে সরতেই দাঁড়িয়ে থাকা ওই ট্রাকে ধাক্কা লাগে।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার পাশে ট্রাক রাখা বন্ধ করতে প্রায়ই টহল দেওয়া হয়। কোনও ট্রাক ধরা পড়লে জরিমানাও করা হয়। তবে নজরদারি কমলেই ফের ট্রাক রাখা শুরু হয়ে যায় বলে অভিযোগ এলাকার মানুষজনের। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে রাতে মাঝে-মধ্যেই রাস্তায় ট্রাক চলা বন্ধ রাখা হয়। বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্টও করা হয়েছে।’’ তাঁর আশ্বাস, ডিভিসি মোড়, তিলডাঙা মোড়-সহ বেশ কিছু জায়গায় ওয়াচ টাওয়ার করে জাতীয় সড়কে নজরদারি চালানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

National Highway Truck কাঁকসা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE