শাপলা ফুল আর খেজুর গুড়ে অতিথি বরণ। তারপর মৌরলা, সুবর্ণখয়রা, কালবোশ, কইয়ের নানা পদ। সোমবার, খাল-বিল উৎসবের শেষ দিনে বাঁশদহ বিলের ভাসমান মঞ্চে বাউল, নৌকা বাইচ দেখতে দেখতে চুনো মাছের হরেক পদ চেটেপুটে খেতে দেখা গেল মন্ত্রী, আমলা থেকে সাধারণ মানুষকে। রাত পর্যন্ত চলল বিলে প্রদীপ ভাসানো আর আতসবাজির প্রদর্শনী।
উদ্যোক্তাদের দাবি, বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া চুনোমাছ বাঁচানো এবং জলাভূমি সংস্কার করার ডাক দিয়ে ১৬ বছর আগে শুরু হয়েছিল এই উৎসব। এত দিনে সেই কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। তবে চুনোমাছের গবেষণা কেন্দ্র এখনও বাকি রয়ে গিয়েছে বলে আক্ষেপ জানান তাঁরা। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ যদিও জানান, স্থানীয় বিদ্যানগর গয়ারামদাস বিদ্যামন্দির এ কাজে তিন একর জমি দান করেছে। উদ্যোক্তারা আরও জানান, পর্যটক টানতে বিল সংস্কার, রাস্তা, আলো, সেতুর ব্যবস্থা করার জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। ৭৩ লক্ষ টাকা খরচে তৈরি পর্যটক আবাসেরও এ দিন উদ্বোধন করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। প্রাণিসম্পদ দফতরের তরফে হাঁস-মুগরির বাচ্চা বিলিও করা হয়।
কোবলা গ্রামের বাঁশদহ বিলের পাড়ে উৎসবে অরূপবাবু, স্বপনবাবু ছাড়াও হাজির ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, বিধানসভার সম্পাদক সুজিত ভৌমিক, জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল, অতিরিক্ত জেলাশাসক রত্নেশ্বর রায়, কালনার মহকুমাশাসক নিতীন সিংহানিয়া, ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু, অভিনেত্রী অর্পিতা সরকার প্রমুখেরা। মনোরম পরিবেশ দেখে খালি গলায় গান গেয়ে ওঠেন ইন্দ্রনীলবাবু। গান শেষ হতেই অতিথিদের নিয়ে যাওয়া হয় ভাসমান মঞ্চে। মাটির থালায় কলাপাতা সাজিয়ে শুরু হয় খাওয়া-দাওয়া। মেনু ছিল, ধনেপাতা বাঁটা, বেগুনপোড়া, মৌরলা ভাজা, সুবর্ণখয়রা ভাজা, চুনো মাছের টক, রুই মাছ ভাজা, তেল কই, কালবোশের ঝোল, পেঁয়াজকলি দিয়ে চুনো মাছের ঝাল, কাতলা কালিয়া, চাটনি এবং নলেন গুড়ের পায়েস। হাত চাটতে দেখা যায় অনেক মন্ত্রীকেই। উদ্যোক্তারা জানান, সমস্ত মাছ বিল থেকে ধরা। আয়োজন ছিল নৌকা বাইচ ও সাঁতার প্রতিযোগিতার। বিলে সন্ধ্যা প্রদীপ ভাসিয়ে শেষ হয় অনু্ষ্ঠান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy