মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মেলার পরেও, পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি একটি পুকুর— এই অভিযোগ তুলে বুধবার আসানসোলের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে বিক্ষোভ অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেন কুমারপুরের কিছু বাসিন্দা। অতিরিক্ত জেলাশাসকের (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) দফতরে স্মারকলিপিও দেন তাঁরা। দ্রুত পুকুর ফেরানোর ব্যবস্থা না হলে টানা অবস্থানে বসার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছে
জেলা প্রশাসন।
ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, আসানসোলের কুমারপুর মৌজার ১৯১ দাগে প্রায় এক একর পাঁচ শতকের একটি পুকুর ভরাট করেছেন স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। পুকুর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বাসিন্দারা। অতিরিক্ত জেলাশাসকের (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) দফতরে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। শেষে নথিপত্র-সহ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠান তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দা গোবর্ধন মণ্ডলের কথায়, ‘‘মাসখানেক আগে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে স্থানীয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। আমরা সেই আশ্বাস পেয়ে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের উপরে আস্থা রেখেছিলাম। কিন্তু কোনও উদ্যোগ হয়নি। তাই ফের পথে নেমেছি।’’
বুধবার সকালে ওই বাসিন্দারা মিছিল করে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা জানান, প্রায় ৬০ বছর ধরে তাঁরা ওই পুকুরের জল ব্যবহার করছেন। সেখানে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানও করা হয়। প্রথমে পুকুরটি পাঁচিল দিয়ে
ঘেরা হয়। তার পরে ভরাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিতর্কিত অংশটি পশ্চিমবঙ্গ হাউসিং বোর্ডের সম্পত্তি। স্থানীয় ব্যবসায়ী শঙ্কর শর্মা সেটি কয়েক বছর আগে ৯৯৯ বছরের জন্য লিজ় নিয়েছেন। শঙ্কর শর্মার যদিও দাবি, ‘‘বিতর্কিত অংশটি কখনও পুকুর ছিল না। ওই বাসিন্দারা চাইলে আদালতে যেতে পারেন।’’
তবে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রের খবর, তাদের নথিতে ১৯১ নম্বর দাগের অংশটি পুকুর বলে উল্লেখ করা রয়েছে। এবং তা সর্বসাধারনের ব্যবহারের জন্য বলেও উল্লেখ করা আছে বলে আধিকারিকেরা জানান। তবে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ দিন বার বার চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি তাঁকে
পাঠানো মেসেজেরও।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)