Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সাজবে মাইথন, পরিকল্পনা জেলা প্রশাসনের

মাইথনের পর্যটনস্থল বলতে এতদিন জলাধার লাগোয়া এলাকাই পরিচিত ছিল পর্যটকদের কাছে। কিন্তু এ বার আশপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল-সহ একাধিক দ্বীপকে সাজিয়ে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শোভা: মাইথনকে কেন্দ্র করে আশা, এলাকার অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ারও। নিজস্ব চিত্র

শোভা: মাইথনকে কেন্দ্র করে আশা, এলাকার অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ারও। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৬
Share: Save:

রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে মাইথনের গুরুত্ব আরও বাড়াতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। বেশ কয়েকটি অঞ্চল চিহ্নিত করে সেখানে বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলার রূপরেখা তৈরি হয়েছে। সালানপুর ব্লক প্রশাসনকে এ ব্যপারে একটি প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি।

মাইথনের পর্যটনস্থল বলতে এতদিন জলাধার লাগোয়া এলাকাই পরিচিত ছিল পর্যটকদের কাছে। কিন্তু এ বার আশপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল-সহ একাধিক দ্বীপকে সাজিয়ে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে সিদাবাড়ি, বাথানবাড়ি, আনন্দদ্বীপ, সবুজদ্বীপ, সরকুরি ও গামারকুরি অঞ্চল। আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রথমে আনন্দদ্বীপের সৌন্দর্যায়নে হাত দেওয়া হবে। শিশুদের বিনোদন-সহ পর্যটকদের যাবতীয় স্বাচ্ছন্দ ও মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা থাকবে। সালানপুরের বিডিও এই রিপোর্ট তৈরি করেছেন। প্রলয়বাবু বলেন, ‘‘রাজ্যের পর্যটন দফতরের বিশেষজ্ঞ আধিকারিকদের পরামর্শ মতোই মাইথন সাজানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ প্রাথমিক ভাবে এই পরিকল্পনা রূপায়নে প্রায় দশ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

পর্যটকদের জন্য কী কী থাকছে এখানে?

আনন্দদ্বীপ ঘিরে একটি ইকো ট্যুরিজম পার্ক গড়া হচ্ছে। থাকছে আধুনিক বিনোদনের সরঞ্জাম-সহ শিশুদের খেলার পার্ক। পর্যটকদের রাতে থাকার ১২ আধুনিক কর্টেজ তৈরি করা হবে। পান্থশালা, মিউজিক্যাল ফাউন্টেন, সৌরবিদ্যুৎ ও পানীয় জলের প্ল্যান্টও বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য তৈরি হচ্ছে ওয়াচ টাওয়ার। ২৪ ঘণ্টা মোতায়েন থাকবেন সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মী। আনন্দদ্বীপটি মূলত রাজ্যের বন দফতরের আওতায় রয়েছে। তাই বনদফতরের কাছ থেকেও ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রকল্প রিপোর্টটি তৈরির দায়িত্বে থাকা সালানপুরের বিডিও তপনকুমার সরকার বলেন, ‘‘জেলাশাসকের নির্দেশে আমি রিপোর্ট তৈরি করেছি।’’ তিনি জানিয়েছেন, এটি রূপায়িত হলে হলে পর্যটকদের কাছে ওই দ্বীপটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

এ দিকে, আনন্দদ্বীপকে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনায় খুশি এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের মতে, পর্যটকদের কাছে মাইথনের গুরুত্ব বাড়লে ভ্রমণার্থীদের ভিড় বাড়বে। এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নও হবে। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বছর তিনেক আগে সবুজদ্বীপকেও সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। বেড়েছিল পর্যটকদের আনাগোনা। উপকৃত হয়েছিলেন এলাকার ব্যবসায়ীরা। কিন্তু প্রশাসনের সঠিক দেখভালের অভাবে বছর ঘুরতেই ভেঙে পড়েছে সবুজ দ্বীপের সৌন্দর্য। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, আনন্দদ্বীপের ক্ষেত্রেও এমনটা হবে না তো? জেলা কর্তারা অভয় দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Maithon Tourism Maithan Dam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE