ছাপা নির্দেশিকার দিন শেষ। স্কুলের বেশির ভাগ চিঠি আসে ই-মেলে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রমেও রয়েছে কম্পিউটার। ফলে স্কুলে স্কুলে একাধিক কম্পিউটার থাকা এখন আবশ্যিক। অথচ নৈশপ্রহরী না থাকায় বেড়েই চলেছে স্কুলের কম্পিউটার চুরি। তার সঙ্গে ছেলেমেয়েদের কম্পিউটারের জ্ঞানও অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি।
স্কুলগুলির দাবি, সরকারের নানা প্রকল্প থেকে কম্পিউটারগুলি কেনা হয়। চুরি হয়ে গেলে আবার কেনা, সমস্ত তথ্য-নথি পুনরুদ্ধার প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। কিন্তু টাকার অভাবে রাতে পাহারাদারও রাখা যায় না। সেক্ষেত্রে সরকারের তরফে সাহায্যের দাবি করেছেন তারা। যদিও নৈশরক্ষী না থাকার সমস্যা মেনে নিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শকের দাবি, যতদিন না স্থায়ী সমাধান হয়, ততদিন স্কুলগুলিকেই আর একটু দায়িত্ব নিতে হবে।
সম্প্রতি বুদবুদ হিন্দি হাইস্কুল, কাঁকসার আমলাজোড়া হাইস্কুলে কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটে। গত অক্টোবরে জামালপুরের ঝাপানডাঙা পরেশনাথ বিদ্যামন্দিরের দশটি কম্পিউটার চুরি যায়। কম্পিউটার খোওয়া যায় কালনার সাতগাছিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, হাটগাছা উচ্চ বিদ্যালয়, নতুনগ্রাম হাইস্কুল, সাতগাছিয়া বয়েজ উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব সাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয় সহ বেশ কয়েকটি স্কুলেও। তবে কোনওটিরই কিনারা হয়নি বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, চুরি যাওয়া কম্পিউটারগুলির বেশির ভাগ এসেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ‘ইনফরমেশন কমিউনিকেশন টেকনোলজি’ প্রকল্পে। ওই প্রকল্পে কম্পিউটার ছাড়াও প্রজেক্টর, প্রিন্টার, স্ক্যানার কেনা এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য গ্রামের গরিব পড়ুয়ারা যাতে বিনা খরচে কম্পিউটার শেখার সুযোগ পায়। কিন্তু একের পর এক কম্পিউটার চুরির ঘটনায় ওই প্রকল্প রুপায়ণে সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে স্কুলগুলির অভিযোগ। বুদবুদ হিন্দি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ যাদব বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে স্কুলের ৮ টি কম্পিউটার চুরি হয়। থানাকে জানান হয়েছে। কিন্তু সেই কম্পিউটার উদ্ধার হয়নি। নতুন করে কম্পিউটারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’’ তিনি আরও জানান, শুধু ওই স্কুলে নয় বহু স্কুলেই এক সমস্যা রয়েছে। তাঁদের আর্জি, নিরাপত্তা রক্ষী রাখার ব্যবস্থা সরকার থেকে করা হলে উপকার হবে।