Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বোতল নিয়ে খেলতে গিয়ে মৃত্যু ছাত্রের

স্থানীয় বাসিন্দা তরুণ কোলের দাবি, ‘‘খবর পেয়ে গিয়ে দেখি, সায়ন অচৈতন্য অবস্থায় শুয়ে রয়েছে। গ্রামের হাতুড়ে চিকিৎসক বর্ধমান নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। আমরা অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে বর্ধমান নিয়ে যাওয়ার পথে গাংপুরে সব শেষ হয়ে যায়।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামালপুর শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ০২:৫০
Share: Save:

গৃহশিক্ষিকার কাছে পড়ার ফাঁকে দুই বন্ধু জলের বোতল ছুড়ে খেলা করছিল। সেই বোতলই বুকে লেগে এক কিশোরের মৃত্যু হল জামালপুরের মহিন্দর গ্রামে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনার বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে মৃত কিশোর সায়ন ঘোষের (১৫) বাবা জামালপুর থানায় কয়েক জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। শুক্রবার মৃত কিশোরের ময়নাতদন্ত হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সায়নের বাড়ি জামাপুরের পারুল গ্রামে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ মহিন্দরগ্রামে এক বান্ধবীর বাড়িতে পড়তে যায়। সেখানে ওই গ্রামেরই এক গৃহশিক্ষিকার কাছে স্থানীয় পর্বতপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির চার ছাত্র ভূগোল পড়ে। পড়ুয়ারা পুলিশকে জানিয়েছে, শিক্ষিকা একটি খাতার উপর ভূগোলের বিষয় দুই ছাত্রীকে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। সেই সময় সায়ন ও আর এক ছাত্র নিজেদের মধ্যে জল ভর্তি বোতল নিয়ে লোফালুফি খেলছিল। আচমকাই জলের বোতল সায়নের বুকের বাঁ দিকে লাগে। সে যন্ত্রণায় শুয়ে গোঁ গোঁ করতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা তরুণ কোলের দাবি, ‘‘খবর পেয়ে গিয়ে দেখি, সায়ন অচৈতন্য অবস্থায় শুয়ে রয়েছে। গ্রামের হাতুড়ে চিকিৎসক বর্ধমান নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। আমরা অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে বর্ধমান নিয়ে যাওয়ার পথে গাংপুরে সব শেষ হয়ে যায়।’’

মৃত কিশোরের বাবা বসন্ত ঘোষ পুলিশের কাছে গৃহশিক্ষিকা এবং তাঁর কাছে ঘটনার দিন পড়তে যাওয়া বাকি তিন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েক করেছেন। তাঁর দাবি, বিকেল পাঁচটায় তিনি নিজে ছেলেকে পড়াতে দিয়ে গেলেন আর সাড়ে ৫টায় দিদিমণির ফোন থেকে ছেলে অসুস্থ বলে খবর পান। মহিন্দর গ্রামের ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন তাঁর ছেলে মারা গিয়েছে। ‘রহস্যজনক’ এই মৃত্যুর কারণ খুঁজতেই তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই চার জনই তাঁর ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে দাবি বসন্তবাবুর।

স্কুল সূত্রে জানা যায়, সায়ন পড়াশোনায় ভাল ছিল। যার সঙ্গে বোতল নিয়ে খেলছিল, সেই ছেলেটির সঙ্গে তার খুবই বন্ধুত্ব। লেখাপড়া থেকে খেলা—সবেতেই এক সঙ্গে থাকত ওই দুই বন্ধু। এ দিন ওই বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তালাবন্ধ। গৃহশিক্ষিকার বাড়িতে গেলে তিনি ‘নেই’ বলে ভিতর থেকে জানানো হয়। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পরে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Student Dead Boy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE