নানাবিধ শংসাপত্র থেকে বাড়ির নকশা অনুমোদন— দুই পুরসভা থেকে নানা পরিষেবা পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ শহরবাসীর। বর্ধমান ও গুসকরা শহরে পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে প্রশাসক বসানো হয়েছে। কিন্তু জনপ্রতিনিধি না থাকায় নানা কাজের জন্য হোঁচট খেতে হচ্ছে, দাবি নাগরকিদের অনেকেরই। পুরসভার কর্মী-আধিকারিকদের একাংশেরও দাবি, পুরবোর্ডের প্রধানেরা যে কোনও কাজের জন্য উপরমহলে যে ভাবে তদ্বির করতে পারতেন, অন্য নানা দায়িত্ব সামলে প্রশাসনের কর্তাদের পক্ষে তা করা সম্ভব হচ্ছে না।
এই দুই পুরসভার একটিতে প্রশাসক বসানো হয়েছে মাস দুয়েক আগে, অন্যটিতে প্রায় দেড় মাস। শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছ থেকেই প্রয়োজন মতো শংসাপত্র পাওয়া যেত। কিন্তু এখন সে জন্য পুরসভার অফিসে যেতে হচ্ছে। বাড়ি বা বহুতল আবাসন তৈরির নকশা অনুমোদন আটকে রয়েছে। মিলছে না মিউটেশন শংসাপত্রও। ফলে, অনেক বাসিন্দা সমস্যায় পড়ছেন। আইনজীবীদের দাবি, বাড়ি তৈরির নকশা অনুমোদন আটকে থাকায় ব্যাঙ্কে আবেদন করেও ঋণ মিলছে না। বর্ধমান আদালতের আইনজীবী রাজদীপ গোস্বামীর কথায়, ‘‘মিউটেশন আটকে থাকায় নানাবিধ সমস্যা হচ্ছে।’’ এ ছাড়া দৈনন্দিন কাজকর্মেরও গতি কম বলে অভিযোগ উঠেছে।
গুসকরার প্রাক্তন কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘পানীয় জল দেওয়ার ব্যাপরে পুরবোর্ডের দিনভর নজরদারি থাকত। তাতে খামতি এসেছে। সে জন্য শহরের সব জায়গায় নির্দিষ্ট পরিমাণে জল মিলছে না।’’ নানা এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শীতেও নিকাশির ব্যবস্থা ঠিকমতো হচ্ছে না। এ ছাড়া জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র সময়ে মিলছে না। উত্তরাধিকার শংসাপত্র নিয়েও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য কিস্তির টাকা পেতেও সমস্যায় পড়ছেন গরিব মানুষেরা। আয় বা আবাসিক সংক্রান্ত শংসাপত্র পেতে আদালতে হলফনামা দিতে হচ্ছে বলেও কয়েকজন শহরবাসী অভিযোগ করেন।
বর্ধমান পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে বায়ো-গ্যাস প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে বেশ কয়েক মাস আগে। দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়াও শেষ। কিন্তু পুরসভার কর্মীদের একাংশের দাবি, তদ্বির করার অভাবে ওই প্রকল্পের গতি আটকে রয়েছে। বর্জ্য সাফাইয়ের জন্য শহরের বেশ কিছু জায়গায় নতুন করে ‘কমপ্যাক্ট’ যন্ত্র বসবে। বোর্ড না থাকায় শহরের কোথায়-কোথায় ওই যন্ত্র বসানো হবে তা ঠিক করতে পারেনি পুরসভা। শহরের বিভিন্ন রাস্তা খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। সম্প্রতি দু’দিন বৃষ্টির পরে সেগুলির হাল খারাপ হয়েছে। রাস্তা সংস্কার নিয়েও ধন্দে রয়েছেন নাগরিকেরা।
বর্ধমানের পুরসচিব জয়রঞ্জন সেন অবশ্য বলেন, ‘‘প্রাথমিক কিছু সমস্যা ছিল। সেগুলি কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। কাজে অগ্রগতি এসেছে। বাড়ি তৈরির নকশার অনুমোদন দেওয়া শুরু হয়েছে। মিউটেশনও খুব তাড়াতাড়ি দেওয়া হবে।’’ এই পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক অমিতকুমার গুহর বক্তব্য, ‘‘উপযুক্ত নথিপত্র থাকলে সঙ্গে-সঙ্গেই শংসাপত্র দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy