স্বাস্থ্যবিমার কার্ড দেখিয়ে তাঁতিরা বছরে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা পেতে পারেন, অথচ সামান্য অসুখেই মোটা টাকা কেটে নিচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল। কেউ বা আবার সরকারি প্রকল্পের খোঁজই রাখেন না। —বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে এমনই বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ উঠেছে বারবার। এই সমস্যার সমাধানে এ বার খাতা-পেন হাতে বাড়ি বাড়ি যাবেন পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যরা।
সম্প্রতি বগপুর পঞ্চায়েতের দামোদরপাড়া গ্রামের একটি বৃদ্ধাশ্রমে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই ঠিক হয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য— এই তিনটি বিষয়ে কী কী সরকারি প্রকল্প রয়েছে, সেগুলি থেকে কতখানি সুবিধা মিলবে, তা পঞ্চায়তে সদস্যদের জানানো হবে। সদস্যদের প্রত্যেককে তিনটি খাতা দেওয়া হবে। তারপরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে জানানো ও অভাব-অভিযোগ লিখে রাখা হবে। শুধু তাই নয়, দরকারে বাসিন্দাদের ঘরে বসে ফর্ম পুরণও করা হবে, যাতে দ্রুত সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মেলে। দিন কয়েকের মধ্যেই এই কাজ শুরু হবে বলে দাবি।
পঞ্চায়েত সদস্যরা জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে খাদ্যসাথী প্রকল্পে রেশন দোকান থেকে পরিমাণ মতো চাল পাচ্ছেন কি না, শিক্ষাশ্রী প্রকল্প, স্বাস্থ্যবিমা যোজনার সুবিধা মিলছে কি না ইত্যাদি। বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলারও চেষ্টা করা হবে। এই কাজে পঞ্চায়েত সদস্যদের সাহায্য করবে স্নেহাশক্তি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংস্থা।
এই ব্লকে শ্রীরামপুর, সমুদ্রগড়, নসরতপুর, নাদনঘাট, বগপুর, দোগাছিয়া, জাহান্নগর পঞ্চায়েত রয়েছে। প্রতিটি পঞ্চায়েতেই ক্ষমতায় রয়েছে শাসকদল। পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি আসনের ১৫টি এবং পঞ্চায়তের ১৫২টি আসনের মধ্যে একশোরও বেশি আসনেও রয়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, এই উদ্যোগে বিরোধীদের দখলে থাকা পঞ্চায়েতগুলি বাদ যাবে না তো। যদিও তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের আশ্বাস, রাজনৈতিক রং না দেখেই কাজ করা হবে।
পঞ্চায়েত সদস্যরা কোনও ভাবে অসুবিধায় পড়লে তাঁদের পাশে থাকবেন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা। পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিকের দাবি, ‘‘এটা খুব ভাল পরিকল্পনা। এই কাজে বহু মানুষ উপকৃত হবেন।’’
তবে এই পরিকল্পনার অন্য দিকও রয়েছে বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি। বর্তমানে রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকায় পঞ্চায়েত সদস্যদের তেমন কাজ নেই। এই উদ্যোগের ফলে এক দিকে জনসংযোগ বৃদ্ধি এবং অন্য দিকে বিরোধীদের কাছেও ভাল বার্তা দেওয়া যাবে। এর সুফল মিলতে পারে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও। শুধু তাই নয়, একই কাজে অনেকে যুক্ত হওয়ায় দলের গোষ্ঠী কোন্দলেও রাশ টানা যাবে।
যদিও মন্ত্রী স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘অনেকেই অভিযোগ করেন সরকারি সুবিধা মিলছে না। অথচ সরকার গ্রামের মানুষের জন্য অজস্র সুবিধা পৌঁছে দিতে আন্তরিক। তাই এমন উদ্যোগ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy