টোটো তুলে দেওয়া, টোটো চালকদের পরিচয়পত্র বাধ্যাতামূলক করে দেওয়া নিয়ে বিতর্ক চলছিলই। এ বার বর্ধমান শহরে ১২ ঘণ্টার ভাগে বেঁধে দেওয়া হল টোটোকে।
বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের দফতর শহরের যান চলাচল সংক্রান্ত বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সারা দিনে নীল টোটো, আর রাতে সাদা রঙের টোটো চলবে শহরে। শহর ও শহরতলি জুড়ে ৭৩টি রুটের প্রতিটিতে ২০টি করে টোটো থাকবে। টোটো চালকদেরও গাঢ় নীল রঙের পোশাক পরা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হবে মালিকানার পরিচয়পত্রও। টোটো চালকেরা অবশ্য বিধি নিষেধের ঠেলার হতাশ। টোটো মালিকদের নেতা রাম সিংহ বলেন ‘‘মনে হচ্ছে অন্য পেশায় যেতে হবে।’’
এমনিতেই সকালের ব্যস্ত সময়ে জিটি রোড, জেলখানা রোড, বিসি রোড, পিবি ঘোষ রোড-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যানজট রোজকার ঘটনা। তার উপর ওই রাস্তাগুলির উপরে থাকা বাজার, সরকারি, বেসরকারি দফতরে যাতায়াত অবরও যন্ত্রণার বলে অভিযোগ শহরবাসীর। তার মধ্যে রিকশা, টোটো, বাস মিলিয়ে নড়াচড়া দায় হয়ে পড়ে বলেও তাঁদের অভিযোগ। বিশেষত টোটোগুলি নির্দিষ্ট রুটে চলছে না বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ব্যবস্থার দাবি ছিলই।
জেলা প্রশাসনের দাবি, এ দিনের বৈঠকে তারই সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু, পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল, জেলা পরিবহণ আধিকারিক প্রদীপ মজুমদার, পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত, কাউন্সিলর খোকন দাস প্রমুখ। বৈঠক শেষে সৌমিত্রবাবু বলেন, ‘‘বর্ধমান শহরে পরিবহণ সমস্যা দূর করতে এ বার থেকে টোটো ও বাসগুলি নিয়ন্ত্রিত ভাবে চলবে। যান চলাচল সংক্রান্ত নতুন একটি নির্দেশিকাও জারি করবে জেলা পরিবহণ দফতর।’’ জেলাশাসকের আশা, সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখ থেকে নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী যানবাহন চলবে।
শুধু টোটো-র রুটই নয়, শহরের মধ্যের বাস রুট নিয়েও একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে। সিদ্ধান্ত হয়েছে দক্ষিণ দামোদর থেকে আসা বাসগুলি তেলিপুকুর হয়ে দু’নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে সরাসরি আলিশা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছবে। তারপর আলিশা থেকে পুরোনো জিটি রোড হয়ে বীরহাটা, শাঁখারিপুকুর দিয়ে সদরঘাট রোড ছুঁয়ে বাসগুলি ফিরে যাবে দক্ষিণ দামোদর রুটে। অর্থাৎ পরিবর্তিত রুটে বাসগুলি আগের মতো তেলিপুকুর থেকে সদরঘাট হয়ে বীরহাটায় আর ঢুকতে পারবে না। প্রশাসন সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, বাস রুট দিয়ে টোটো-র চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে।
প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বাস মালিকেরাও। টাউন সার্ভিস বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রাধেশ্যাম ঘোষাল বলেন, ‘‘রাস্তায় টোটো নামার পর থেকেই আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলাম। নতুন সিদ্ধান্তে উপকারই হবে।’’
শহরজুড়ে গোটা কয়েক পার্কিং স্ট্যান্ড তৈরিরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বিসি রোড, জিটি রোড, আর বি ঘোষ রোড-সহ শহরের যে কোনও রাস্তায় আর পার্কিং করা যাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy