Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তোলা চাওয়ার অভিযোগ রানিগঞ্জে

তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের শহর সভাপতির বিরুদ্ধে। একটি জমিতে পাঁচিল দেওয়া নিয়ে রানিগঞ্জে ওই নেতা-সহ শাসকদলের চার জনের বিরুদ্ধে ১০ লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগ করেছেন শহরের বাসিন্দা অয়ন কুণ্ডু। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অলোক বসু যদিও তা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০০:২৮
Share: Save:

তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের শহর সভাপতির বিরুদ্ধে।

একটি জমিতে পাঁচিল দেওয়া নিয়ে রানিগঞ্জে ওই নেতা-সহ শাসকদলের চার জনের বিরুদ্ধে ১০ লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগ করেছেন শহরের বাসিন্দা অয়ন কুণ্ডু। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অলোক বসু যদিও তা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিগঞ্জ ইস্ট কলেজ পাড়ায় অয়নবাবুদের প্রায় এক একর জমি রয়েছে। সে নিয়েই এই বিরোধের সূত্রপাত। অয়নবাবুর দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা মতো পুজো ও অন্য নানা সামাজিক কাজকর্মের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা ছেড়ে রেখে জমির চার দিকে পাঁচিল দেওয়া হচ্ছিল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সদ্য মনোনীত শহর তৃণমূল সভাপতি অলোকবাবু এবং তাঁদের নেতা খলিলুর রহমান, মিহির সিংহ ও অশোক দেব হুমকি দেন, ১০ লক্ষ টাকা না দিলে ওই জমিতে কোনও কাজ করা যাবে না।’’ ৩০ মার্চ তিনি রানিগঞ্জ থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জমিতে অনেক দিন ধরে দুর্গাপুজো ও কালীপুজো হয়। জমির মধ্যে একটি মন্দির রয়েছে। প্রায় ৪০ বছর ধরে মাঠটি দুর্গা মাঠ নামে পরিচিত। তৃণমূল নেতা অলোকবাবুর দাবি, কুণ্ডু পরিবার বহু দিন আগে ওই জমি সামাজিক কাজের জন্য দান করেছে। এখন পরিবারের সদস্যেরা জমিটি ঘির ফেলতে চাইছেন। তাতে বাসিন্দারা বাধা দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বাসিন্দারা আদালতে গেলে ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ওই জমিতে এখন নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার কথা।’’ তাঁর আরও দাবি, আদালতের নির্দেশ জারি হওয়ার পরেই অয়নবাবুরা তাঁদের নামে তোলাবাজির মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মঙ্গলবার আমি রানিগঞ্জ থানায় নিরপেক্ষ তদন্ত করে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছি।”

আর এক অভিযুক্ত মিহিরবাবুর আবার দাবি, গোটা বিষয়টি জানাতে কয়েক দিন আগে ইস্ট কলেজ পাড়ায় বাসিন্দারা বিধায়কের কার্যালয়ে যান। তখন বিধায়ক তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘জমির বিষয়টি নিয়ে ওই বাসিন্দারা আমাদের কাছে এলে তাঁদের আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। এর পরেই জানতে পারি, আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’’

বিধায়ক অবশ্য দুর্ব্যবহারের কথা মানতে চাননি। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষকে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, জমিতে মন্দির যেমন আছে তেমনই থাকবে। চার দিকে রাস্তার জন্য ও একটি কমিউনিটি সেন্টার তৈরির জন্য জমি ছেড়ে কুণ্ডু পরিবার নিজেদের জমি ঘিরতে পারবে। তাঁর দাবি, ‘‘দু’পক্ষই তখন বিষয়টি মেনে নিয়েছিল। এর পরে কুণ্ডু পরিবারের পক্ষ থেকে অয়নবাবু আমাকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেন, অলোকবাবুরা ওই জমি দেখার নাম করে গিয়ে তাঁদের কাছে থেকে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি আদালতের বিবেচনাধীন। আইনের পথেই সব মীমাংসা হবে।”

১৪৪ ধারা জারি হওয়া নিয়ে জমির মালিকদের দাবি, শরিকি সমঝোতার অভাবেই এমন হয়েছে। রানিগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জমিতে সপ্তাহখানেক আগে ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তার পরে দু’টি অভিযোগ জমা পড়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট শীঘ্রই আদালতে জমা দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE